বাংলাদেশ সীমান্তে পা রাখতেই হাতে ফুল পেয়ে বেশ খুশি প্রভাতী দাস। কেমন লাগছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। আমরা তো খুশি মনেই বেড়াতে যাচ্ছিলাম। আমরা আরো খুশি হলাম এমন আয়োজন দেখে।’
প্রায় একই ধরণের কথা বলেন দিশা সাহা। জানালেন, ভালো লাগছে। বাংলাদেশে পূর্ব পুরুষদের বাড়ি ছিলো। তবে সেটা কোথায় জানেন না। দু’দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা জানিয়ে ফুল হাতে থাকা ওই ভারতীয় নাগরিকও কথা বলার সময় ছিলেন বেশ হাস্যোজ্জ্বল।
প্রভাতী দাস ও দিশা সাহার মতো ৩৮ ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে এসেছেন ঘুরতে। পদ্মসেতুসহ কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত দেখতে প্রতিবেশি রাষ্ট্রে তাঁদের পা রাখা। এখানে আসতেই শূণ্য রেখায় অভ্যর্থনা পেয়ে তাঁরা বেশ উচ্ছ¡সিত।
একটি ‘ভ্রমণসংস্থা’ এর মাধ্যমে সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তাঁরা ভারতে প্রবেশ করেন। ভারতীয় পর্যটক দলটি ছয়দিনের ভ্রমণ শেষে একই পথ দিয়ে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
মূলত বাংলাদেশে ভারতীয় পর্যটকদের আকর্ষণ করতেই স্থলবন্দরে আগতদের বিশেষ অভ্যর্থনা জানানোর মতো এ ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন অফিস মূলত উদ্যোগটি গ্রহন করে।
এরই অংশ হিসেবে হাই কমিশনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ট্যুরিস্ট পুলিশকে অবহিত করলে তাঁরা সেটি বাস্তবায়ন করে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সূত্র জানায়, আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচলকারি বিআরটিসি শ্যামলী বাসে করে ৩৮ জনের ভারতীয় দল বাংলাদেশে আসেন।
বেলা সোয়া দুইটার দিকে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। এ সময় ট্যুরিস্ট পুলিশ কুমিল্লা জোনের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) দীপক কুমার দাস ভারতীয় ওই প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান।
ইমিগ্রেশন পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দেওয়ান মোর্শেদুল আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে প্রবেশের পর ফুলেল শুভেচ্ছাসহ নানা দিকনির্দেশনা পেয়ে ভারতীয় নাগরিকরা বেশ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
বাংলাদেশে ঘুরার সময় ট্যুরিস্ট পুলিশ তাদেরকে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। বাংলাদেশে ঘুরতে আসা ভারতীয় নাগরিক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশে আসার ইচ্ছা ছিলো। এখন সেটা বাস্তবায়ন হতে চলেছে।
আর এখানে এসে এ ধরণের আতিথিয়তা পেয়ে আমাদের অনেক ভালো লাগছে।’ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার এন আর ট্রাভেলস এর ম্যানেজার বিকাশ চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা এখন অনেক ভালো। ভারতীয়রাও এখানে আসতে আগ্রহী।
ত্রিপুরায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের কর্মকর্তা আরিফ মোহাম্মদ ভারতীয়দের এ আগ্রহকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়ায় এখন ভারতীয়রা বেশি বেশি বাংলাদেশে আসছেন।
তিনি আরো জানান, দলটি ঢাকায় দু’দিন থেকে বাংলাদেশের স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখার পাশাপাশি বিভিন্ন মন্দির দেখবেন। ত্রিপুরা থেকে সবচেয়ে কাছের সমুদ্রবন্দর কক্সবাজার দেখতেও যাবেন তাঁরা। ২৬ নভেম্বর দলটি ভারতে ফিরবেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুমিল্লা জোনের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) দীপক কুমার দাস জানান, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমানের নির্দেশে ভারতীয় পর্যটকদের আখাউড়া বন্দরে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। যে কয়দিন তাঁরা থাকবে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।