নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচে আজ খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ জেতার পর দ্বিতীয়টি পরিত্যক্ত হওয়ায় টাইগারদের সামনে সুযোগ ছিল কিউইদের হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার। তবে এ লক্ষ্যে খেলতে নেমে সফল হতে পারেনি লাল-সবুজের দল। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন সৌম্য সরকার-নাজমুল শান্তরা। কিউই বোলারদের তোপে ১৯.২ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে শান্তর দল সংগ্রহ করে ১১০ রান।
পরে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শরিফুল ইসলাম-শেখ মেহেদীর জোড়া আঘাতে ম্যাচে ফিরেছিল সফরকারীরা। তবে ষষ্ঠ উইকেটে মিচেল স্যান্টনার এবং জেমস নিশামের জুটিতে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় স্বাগতিকরা। এ দুজন মিলে দলকে নিয়ে যান জয়ের খুব নিকটে। এরপরই বে ওভালে নামে বেরসিক বৃষ্টি। বৃষ্টির বাঁধায় খেলা বন্ধ হওয়ার পর বৃষ্টি আইনে ১৭ হেরেছে বাংলাদেশ। ফলে দুই দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষ হল ১-১ সমতায়।
বাংলাদেশের দেয়া ১১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা ভালোই করেছিলেন কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেন। তানজিম সাকিবের জায়গায় আজ খেলানো হয়েছে স্পিনার তানভীর ইসলামকে। টাইগার স্পিনারের করা প্রথম ওভারেই ১ চার এবং ১ ছয়ে দশ রান নেন অ্যালেন। তবে পরের ওভারে বোলিংয়ে এসেই উইকেটের দেখা পান মেহেদী।
দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলেই মেহেদীর বলে সেইফার্টকে স্ট্যাম্পিং করে আউট করেন রনি তালুকদার। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচে ঝড় তোলা সেইফার্ট আজ বিদায় নেন মাত্র ১ রান করেই। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে আরও এক উইকেট তুলে নেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। এবার তার শিকারে পরিণত হন ডেরিল মিচেল।
চতুর্থ ওভারে মেহেদীর বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে শান্তর মুঠোবন্দী হয় মিচেলও ফিরেন ১ রান করেই। এদিকে মেহেদীর জোড়া আঘাতের বল দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে গ্লেন ফিলিপ্সকে বোল্ড করেন পেসার শরিফুল। ফলে ৫ ওভারেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড যা পরে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে মার্ক চাপম্যানের রান আউট। মুস্তাফিজুর রহমানের ওভারে দৌড়ে রান নিতে গিয়ে মাঝপথে সংঘর্ষে জড়ান দুই কিউই ব্যাটার। এই সুযোগে স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়ে চ্যাপম্যানকে রান আউট করেন মুস্তাফিজ।
এদিকে একপ্রান্তে কিউই ব্যাতারদের যাওয়া-আসা চলতে থাকলেও অপরপ্রান্তে জেকে বসেছিলেন ওপেনার ফিন অ্যালেন। টাইগার বোলারদের সামলে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তিনি। তবে নবম ওভারে তাকে ফেরান শরিফুল। ৩১ বলে ৩৮ রান করে টাইগার পেসারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন অ্যালেন।
তবে এরপর স্বাগতিকদের হয়ে হাল ধরেন স্যান্তনার এবং নিশাম। এ দুজন মিলে পরে গড়েছেন ৪৬ রানের এক জুটি। ফলে চাপ সামলে জয়ের পথে এগোয় নিউজিল্যান্ড। তবে ১৪.৪ ওভারের খেলা হতেই নামে বৃষ্টি। ফলে বন্ধ হয় খেলা। জয়ের জন্য তখন ৫ উইকেট হাতে রেখে ৩২ বলে কিউইদের প্রয়োজন ১৬ রান, নিশাম ও স্যান্টনার অপরাজিত ছিলেন যথাক্রমে ২৮ এবং ১৮ রানে।
এর আগে কিউইদের বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে আজ প্রথম ওভারেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। টিম সাউদির বলে চার মেরে দারুণ কিছুর আভাসই দিয়েছিলেন সৌম্য। তবে ম্যাচের চতুর্থ বলেই লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। এরপর ক্রিজে আরেক ওপেনার রনি তালুকদারের সঙ্গী হন অধিনায়ক শান্ত।
তবে ব্যাট হাতে শান্তও আজ ভরসার প্রতীক হয়ে ওঠতে পারেননি। কিউই বোলারদের উপর আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে তিনিও ফিরেছেন দ্রুতই। ৪ চারে ১৫ বলে ১৭ রান করে পঞ্চম ওভারে শান্ত বিদায় নেয়ার পরের ওভারেই আউট হন আরেক ওপেনার রনি তালুকদার। এরপর আফিফ হোসেন এবং হৃদয় ফিরেছেন দ্রুতই। ফলে ১১ ওভারে দলীয় ৬৮ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর শামিম হোসেন, শেখ মেহেদীরাও আজ দলের হাল ধরতে পারেননি। ফলে শেষ পর্যন্ত ১৯.২ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ১১০ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্যান্টনার।