যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজা কীভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ইসরায়েলের মতের ভিন্নতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে হামাসকে নির্মূল এবং ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে জিম্মিদের উদ্ধারে আমেরিকার সমর্থন ইসরায়েলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার হিব্রু ভাষায় দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও তাঁর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর স্থল অভিযান পরিচালনা ও যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ কমানোর জন্য তাঁদের সর্বাত্মক সমর্থন আমরা পেয়েছি। তবে হ্যাঁ, হামাস নির্মূল হওয়ার পর গাজায় কী হবে, তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। আমি আশা করি এ ক্ষেত্রেও আমরা একটি সমঝোতায় আসতে পারব।
জো বাইডেনকে ইঙ্গিত করে নেতানিয়াহু বলেন, ওসলো ভুলের পুনরাবৃত্তি ইসরায়েলকে আমি করতে দেব না। আমাদের নাগরিক ও সেনাদের এত বড় আত্মত্যাগের পর তা হতে পারে না। গাজায় সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করবে, সন্ত্রাসবাদকে অর্থায়ন করবে, এমন সুযোগ আমরা দিতে পারি না। গাজা হামাসের হবে না, ফাতাহরও হবে না।
নব্বই দশকের এই ওসলো চুক্তিকে ইসরায়েলের একটি ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচনা করেন নেতানিয়াহু। তিনি ওসলো চুক্তিকে ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার সঙ্গে তুলনা করে নিজ দেশেই সমালোচনার মুখে পড়েন।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, জাতিসংঘে প্রস্তাবটি উত্থাাপন করেছিল মৌরিতানিয়া ও মিসর। প্রস্তাবের পক্ষে বাংলাদেশ, ভারতসহ ১৫৩টি দেশ ভোট দিয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েলসহ ১০টি দেশ ভোট দিয়েছে বিপক্ষে। ভোটদানে বিরত ছিল ২৩টি দেশ।
একই দিনে আমেরিকার ওয়াশিংটনে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, গাজায় হামলা অব্যাহত রেখে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন হারাতে শুরু করেছে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে তাঁর কট্টরপন্থী সরকার পরিবর্তন করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন জো বাইডেন।
গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে প্রায় ১৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৯ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছে। যুদ্ধ শুরু থেকে এ পর্যন্ত হামাসের হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক ১ হাজার ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে নরওয়ের রাজধানী অসলোতে ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ওই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, ফিলিস্তিনিরা স্বশাসনের আংশিক অধিকার পাবে এবং ইসরায়েল প্রথমে পশ্চিম তীরের জেরিকো এবং তারপর গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেবে। এর পরিবর্তে, ইসরায়েলি রাষ্ট্রের বৈধতা স্বীকার করে নেবে পিএলও।