বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ৮ কার্তিক ১৪৩১
 

‘নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে দেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে’    গৃহকর্মী হত্যার অভিযোগে বনশ্রীতে বাড়িতে আগুন    ২০২৩ সালে দেশে এইডসে ২৬৬ জনের মৃত্যু     নিউজিল্যান্ডে আরেকটি ঐতিহাসিক জয় টাগইগারদের     নির্বাচন বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের    হবিগঞ্জের ডিসি ও তিন ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ ইসির    ভোট ঠেকানো গণতান্ত্রিক অধিকার নয়: ডিএমপি কমিশনার   
ভোটকেন্দ্রের আপডেট জানা যাবে অ্যাপে
প্রকাশ: বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১২:০০ অপরাহ্ন

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোডস্থ পিটিআই মিলনায়তনে নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় সভাশেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আমরা একটি অ্যাপ তৈরি করেছি যেখানে দুই ঘণ্টা পরপর প্রতিটি কেন্দ্রে কত শতাংশ ভোট পড়ল সে বিষয়ে ইনপুট দেওয়া হবে। মোবাইলের মাধ্যমে অ্যাপ ডাউনলোড করে সেটা সবাই জানতে পারবেন।

তিনি বলেন, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ১০টায় দেখা গেল ১০ শতাংশ ভোট পড়ল, কিন্তু ১২টার দিকে গিয়ে হঠাৎ ৮০ শতাংশ হয়ে গেল। এটি বিশ্বাসযোগ্য হবে না। এজন্য আমরা বিভিন্ন পরিমাপক নিয়েছি, যাতে ভোটগ্রহণের সত্যতা মানুষের মাঝে ফুটে ওঠে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য করতে ভোটের আগে, ভোটগ্রহণের দিন ও পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের করণীয় সম্পর্কে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন।

তিনি জানান, এবার ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকদের প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি নিতে হবে না। তারা সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন এবং ভিতরে ঢুকে সবাই ছবি তুলতে পারবেন। ভোটের সার্বিক চিত্র জনগণকে জানাতে পারবেন। আমরা মনে করি, ভোটের স্বচ্ছতা ফুটে উঠবে মিডিয়ার মাধ্যমে। কারণ মিডিয়ার কর্মীরা ভোটকেন্দ্রের বাইরে এবং ভেতরে থাকবেন।

এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশের সার্বিক চিত্র সম্পর্কে সিইসি বলেন, আমি বেশ ক’টি এলাকায় মত বিনিময় করেছি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। তাদের বক্তব্য শুনেছি। তারা আমাদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের কথা বলেছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার ছেঁড়া, কয়েকটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগও কিছু কিছু জায়গায় এসেছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এসব ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু অধিকাংশ প্রার্থী আমাদের জানিয়েছেন, আজকের দিন পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের আচরণে তারা সন্তুষ্ট।

তিনি বলেন, কিছু প্রার্থী বা তাদের এজেন্ট এমন অভিযোগও করেছেন, ভোট দিয়ে কী লাভ, ভোট তো এক জায়গায় চলে যাবে। আবার কেউ কেউ নাকি ইতিমধ্যে বলেও ফেলেছেন, আপনারা যে যেখানে ভোট দেন, ভোট জায়গামতো চলে আসবে। আমরা বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট এবং সুদৃঢ়। ভোটার ভোট যে মার্কায় দেবেন সেটা আরেক জায়গায় বা বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, সেটি আমরা শতভাগ নিশ্চিত করতে পারি।

ভোটকেন্দ্রে পেশীশক্তির ব্যবহার ও কেন্দ্রে প্রতিপক্ষের ভোটারদের আসতে বাধাদানের পরিবেশ থাকবে কি না জানতে চাইলে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের নির্বাচনের সংস্কৃতিতে অনেকে কালো টাকার বিনিময়ে পেশাদার সন্ত্রাসী ব্যবহার করে। তারা যাতে ভোটকে প্রভাবিত না করতে পারে সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখা হবে। কোনো কেন্দ্রে পেশীশক্তির উদ্ভব ঘটলে প্রিজাইডিং অফিসারকে ভোট বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার যদি বন্ধ না করেন রিটার্নিং অফিসার অবহিত হলে তিনি বন্ধ করে দেবেন। তিনিও যদি বন্ধ না করেন, আর আমরা ঢাকা থেকে অবহিত হলে সেখান থেকে বন্ধ করে দেবো।

আগের রাতে ভোট হবে কিনা প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আগের রাতে ভোটসহ বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে যেসব কথাবার্তা হয়েছে আমরা ৯৯ নয়, শতভাগ নিশ্চিত করতে পারি সেটি কোনো অবস্থাতেই হবে না। এজন্য অনেক কেন্দ্রে ব্যালট পেপার সকালে যাবে। ব্যালট পেপার সকালে না গিয়ে ১০ দিন আগে অথবা ১০ মাস আগেও যদি যায়, তাহলেও প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট সকালে ভোট কেন্দ্রে স্বচ্ছ বাক্সগুলো খালি কি না সেটি দেখে নেবেন। তাদের সামনেই খালি বাক্স সিলগালা করা হবে। সেক্ষেত্রে অবৈধ কোনো ব্যালট পেপার ভোটের বাক্সে ঢোকানোর সুযোগ কারোরই থাকছে না। তারপরও আমরা বিশ্বাস এবং আস্থা অর্জনের জন্য বলেছি, ব্যালট পেপার সকালে পাঠাব। প্রত্যেক প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট সকালে ভোটকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে থেকে যেমন খালি ব্যালট বাক্স দেখে নেবেন, একইভাবে তারা ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ গণনা ও ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। তাদের সামনেই ভোট গণনা শেষে কেন্দ্রের ভোটের হিসাব প্রিজাইডিং অফিসার বা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের সিলসহ তাদের হাতে দেওয়া হবে। এ প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণ ও গণনা যদি যথাযথভাবে শেষ হয় তাহলে নিশ্চিতভাবে ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়ে গেল।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, কথাগুলো বললাম আমাদের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুটা অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে, সেটি যাতে দূর হয়। আমরা নির্বাহী প্রশাসন ও পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। এখানে এসেও ওসি, ইউএনও, ডিসি ও এসপিদের বক্তব্য শুনেছি। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত চট্টগ্রামে ভোটের পরিবেশ ভালো।

বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের আয়োজনে আজ দুপুর একটায় শুরু এ সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ। চট্টগ্রাম বিভাগের সব জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) এতে উপস্থিত ছিলেন।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আক্তার হোসেন রিন্টু
বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ : প্রকাশক কর্তৃক ৮২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক (৩য় তলা) ওয়্যারলেস মোড়, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭।
বার্তা বিভাগ : +8802-58316172. বাণিজ্যিক বিভাগ : +8801868-173008, E-mail: dailyjobabdihi@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক জবাবদিহি সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft