আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাতের সিল মারা ঠেকাতে ভোটকেন্দ্রগুলোতে সকালে ব্যালট পেপার পাঠাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এমন পরিকল্পনার কথা জানান।
তিনি বলেন, এবারও ব্যালটেই নির্বাচন হবে। আগেও যেভাবে এগোনো হয়েছে এবারো সেভাবেই হবে। ব্যালটে নির্বাচনে যাতে কোনো রকম অপব্যবহার না হতে পারে, সে জন্য আমাদের কিছু কৌশল আছে, সেগুলো আমরা প্রয়োগ করার চেষ্টা করবো। তার মধ্যে যেমন একটা, আমরা দায়িত্ব নেয়ার পরে নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠাই, যদি না যোগাযোগ ব্যবস্থা দিক থেকে বাজে অবস্থা না থাকে বা উন্নত না হয়; এই ধরনের ক্ষেত্রে একটু আগে পাঠাই। যোগাযোগ যেখানে ভালো, ভোট চারটায় যাত্রা শুরু করলে ভোট শুরু হওয়ার আগেই পৌঁছাতে পারবে, সে সমন্ত কেন্দ্রে আমরা সকালে ব্যালট পাঠাই।
তিনি আরও বলেন, যতগুলো নির্বাচন ব্যালটে করেছি, ব্যালট এভাবেই সকালে পাঠানো হয়েছে। আমরা জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এই ধরনের সিদ্ধান্ত হয়তো নিতে পারি। যেগুলোতে সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব সেগুলোকে চিহ্নিত করা এবং যেখানে পাঠানো সম্ভব নয়, সেখানে আমরা বিশেষ ব্যবস্থায় রাতে ব্যালট পেপার পাঠাব, পথে যেন মিসইউজ বা ছিনতাই না হতে পারে।
ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, বিষয়টি আমাদের মধ্যে আলোচনাও হয় নাই তেমন। ফরমাল কোনো আলোচনা হয়নি। চিন্তা-ভাবনাও নাই। কারণ আপনারা জানেন যে, ৩০০ আসনে যখন ভোট হয় চার লাখ ভোটকেন্দ্র থাকে। সেখানে হয়তো বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র থাকবে, এতগুলো কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে তা দেখা কঠিন। আমরা সে ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেশি সদস্য নিয়োগ করবো।
তিনি আরও বলেন, সবগুলো রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, সেখানে এমনিতেই একটা ভারসাম্য থাকে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে বরং তারাই শৃঙ্খলা রক্ষায় একটা ভূমিকা নেয়। কারণ তারা জানেন যে, নির্বাচনে যদি কোনো পরিস্থিতির অবনতি হয় বা ভণ্ডুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের বিষয় নিয়ে কোনো চাপ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, এ বিষয়ে কোনো চাপ নেই। থাকবে কেন? আমরা প্রথম থেকেই বলছি, বিদেশি পর্যবেক্ষক যত খুশি আসতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো লিমিটেশন নেই। তারা আমাদের কাছে আবেদন করলে সেটা পাঠিয়ে দিই পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
তারা আবার এটা পর্যালোচনা করে দেখে যে, আবেদনকারীরা আসলেই পর্যবেক্ষক কি না, অতীতে পর্যবেক্ষণে সম্পৃক্ত ছিল কিনা। অনেক সময় তারা মানবপাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে অথবা অন্য অন্যায় কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে, তারা এগুলো দেখে আরকি। এরপর ভিসা দেয়া হলে আমাদের তরফ থেকে আপত্তি থাকে না।
ইতোমধ্যে সংসদ নির্বাচনের কেন্দ্র বাছাই করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি আগামী, ২৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত খসড়া তালিকা ইসিতে জমা দেবে।