প্রকাশ: শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:৫৯ অপরাহ্ন

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু প্রসঙ্গে আজ শনিবার বেলা সাড়ে বারোটার দিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
এঘটনায় কুমিল্লা সদর সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডারকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এদিকে শনিবার বেলা বারোটার দিকে যুবদল নেতা তৌহিদের লাশবাহী গাড়ি নিয়ে হাজারো জনতার সমাবেশ ঘটে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে। এ সময় বিক্ষুব্দ লোকজন তৌহিদের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি শাস্তি চান। তারা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিশাল মানববন্ধন করেন এবং একই স্থানে ঘটনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনী ও সিভিল পোষাক পরিহিত বেশ কিছু লোকজন তাদের বাড়িতে প্রবেশ করেন। এ সময় তৌহিদের পিতার কুলখানির রান্নার আয়োজন চলছিল। কুলখানি শুক্রবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ওই রাতে সেনাবাহিনীর লোকজন তৌহিদ ও তার স্ত্রী সহ অন্যদের মোবাইল ফোন জব্দ করেন। পরে তৌহিদের ঘর তল্লাশি করতে চাইলে তার স্ত্রী কানের কারণ জানতে চান। তখন সেনা সদস্যরা জানান ঘরে অস্ত্র আছে। এরপর ঘর তল্লাশি করে কোন অস্ত্র না পেলেও তৌহিদকে যৌথ বাহিনী আটক করে। তখন তার স্ত্রী অস্ত্র না পাওয়ার পরও কেন আটক করেছে কারণ জানতে চাইলে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনাকারীদের একজন জানান, কাউসার নামে একজনকে ধরতে হবে এজন্য তাকে নিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার সকালে ছেড়ে দেওয়া হবে। সকালে সদর সেনা ক্যাম্পে গেলে ছেড়ে দেওয়া হবে। রাতভর উৎকণ্ঠায় থাকার পর সকাল সাড়ে আটটার দিকে যৌথ বাহিনীর ওই টিম তৌহিদকে নিয়ে তার বাড়িতে আসে। এসময় তৌহিদকে মুমূর্ষুও দেখা যাচ্ছিল বলে তার স্ত্রী দাবি করেন।
তিনি আরো বলেন, সকালে সপনা সদস্যরা তার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন এবং কাউসার ও তার স্ত্রীকে ধরিয়ে দিলে তৌহিদকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান। কিছুক্ষণ বাড়িতে অবস্থানের পর সেনা সদস্যরা তৌহিদকে নিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে আবার চলে যায়। বেলা সাড়ে বারোটার দিকে কোতোয়ালি থানার একজন পুলিশ অফিসারের ফোন পেয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে তৌহিদকে তারা মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার তার স্বামীর মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘটনা সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।