গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের শংকরবাটি ঈদগাহের পাশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙ্গর প্রতীকের একটি নির্বাচনী অফিসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে নোঙ্গরের ওই অফিস পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে।
আগুন দেয়ার পরপরই স্থানীয়রা ছুটে এসে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় পুরো প্যান্ডেল এবং ভিতরে থাকা প্রচার সামগ্রী ও অন্যান্য আসবাবপত্র।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আগুনের পর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে নৌকা ও নোঙ্গরের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বিএনএম মনোনীত নোঙ্গরের প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল মতিন বলেন, আমার প্রতিপক্ষরা ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাতে অফিসে আগুন দিয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিন্টু রহমান বলেন, নির্বাচনী অফিসে প্রথমে খড়ে আগুন ধরে। সে আগুন থেকেই পুরো নির্বাচনী অফিস পুড়েছে।
‘আগুন লাগার ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। নোঙর প্রতীকের প্রার্থী যদি অভিযোগ দেন, তাহলে তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে সংঘর্ষ ও বোমাবাজি এখন নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত এই আসনে ভোটের মাঠে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে এসব ঘটনা।
গত এক মাসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ককটেল হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে- জেলা নির্বাচন অফিস, প্রার্থী বাড়ি, জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পাশের টেনিস গ্রাউন্ড, জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বর, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পাশে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
এছাড়া শহরের শান্তি মোড়, আরামবাগ এবং ফুড অফিস মোড় মসজিদের পাশে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা।
আর এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আব্দুল ওদুদ এবং নোঙ্গরের মোহাম্মদ আব্দুল মতিন পরস্পরকে দোষারোপ করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভোটের মাঠে সংঘর্ষ ও বোমাবাজি নিত্য ঘটনাচাঁপাইনবাবগঞ্জে ভোটের মাঠে সংঘর্ষ ও বোমাবাজি নিত্য ঘটনা
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের পদ ছেড়ে আব্দুল মতিন সম্প্রতি যোগ দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে (বিএনএম)। আব্দুল মতিনকে সমর্থন দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ। এদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের মতো জনপ্রতিনিধি।
জামায়াত-বিএনপি অধ্যুষিত নির্বাচনী এই আসনে গেলো কয়েক বছরে আওয়ামী লীগের ভোট বেড়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে বিভাজিত আওয়ামী লীগের কারণে নির্বাচনের ফলের হিসেব পাল্টে দিতে পারে বলেও তাদের ধারণা।
১৯৮৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে আসনে বিজয়ী হন জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির প্রার্থীরা। ২০০৮ ও ২০১৪ সালে নির্বাচনে জয়ী হন আব্দুল ওদুদ। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হন বিএনপির হারুনুর রশীদ। পরে ২০২৩ সালের উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসেন আব্দুল ওদুদ।