আজ শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ঘোষণা দেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনের নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
ওই আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী আমিনুল হকের মৃত্যুতে আইন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেয় সাংবিধানিক সংস্থাটি। যদিও এখনও প্রজ্ঞাপণ জারি হয়নি।
অশোক কুমার দেবনাথ জানান, আইন অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি এমন কোনো বৈধ প্রার্থী যদি মারা যান অথবা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৯১-ক ও ৯১-ঙ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী, যদি প্রার্থিতা বাতিল হয়। তবে, অনুচ্ছেদ ১৭ এর দফা-১ অনুসারে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার নির্বাচন বাতিল করার বিধান রয়েছে। অতঃপর গৃহীত ব্যবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে।
কমিশন ওই নির্বাচনি এলাকার জন্য নতুন তফসিল ঘোষণা করবেন। সিদ্ধান্ত অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠানে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে যাদের মনোনয়নপত্র আগে বৈধ হয়েছিল তাদের নতুন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে না। তবে, নতুন করে কেউ ওই আসনে নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলে তিনি নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় প্রার্থী হতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অশোক কুমার দেবনাথ জানান, প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করবেন।
ওই আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত এলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তবে, এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে সিদ্ধান্ত পৌঁছায়নি।’
নওগাঁ-২ আসনে আমিনুল হক ছাড়াও আরও তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন—আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী আওয়ামী লীগনেতা আখতারুল ইসলাম।
আমিনুল হকের ছেলে আছিফুল হক বলেন, তার বাবা (আমিনুল হক) মামলার শুনানিতে অংশ নিতে গত সোমবার ঢাকায় যান। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত মঙ্গলবার রাতে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোর ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা, হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন।
জানা গেছে, নওগাঁ-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চেয়ে আমিনুল হক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্রে বিভিন্ন অসঙ্গগতি তুলে ধরে তার প্রার্থিতা বাতিল করে। পরে আমিনুল হক প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার জন্য হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত বুধবার আমিনুল হকের প্রার্থিতা বৈধ বলে রায় দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার নওগাঁ জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরের দিন আজ তার মৃত্যু হলো।