গোটা দুনিয়া এখন বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনায় মাতোয়ারা। বিভিন্ন দলের সমর্থকদের উত্তেজনা রূপ নিচ্ছে পাগলামিতে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন এসবেই সয়লাব।
কেউ পতাকা টাঙাচ্ছেন, কেউ শরীরে ট্যাটু বানাচ্ছেন, কেউ বা পছন্দের খেলোয়াড়ের আদলে চুলে ডিজাইন করছেন।এমনই একজন ফুটবল ভক্ত মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা লস্কর।
তিনি তার পুরো ঘরকেই তার প্রিয় দল হল্যান্ডের (নেদারল্যান্ডস) পতাকা, লোগো, জার্সি, ছবি ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে ফেলেছেন।
বিছানার চাদর, বালিশ কভার এমনকি সোফা কাভারকেও হল্যান্ডের পতাকা দিয়ে সুসজ্জিত করেছেন। তার সংগ্রহে আছে পছন্দের দলের ২৫টিরও বেশি জার্সি।
খেলার সময় যেন কোনো ডিস্টার্ব না হয় সে জন্য স্ত্রীর সঙ্গে করেছেন লিখিত চুক্তিও।তিনি তার চুক্তিতে লিখেছেন, ‘২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে ফ্ল্যাটের ১৮ ফুট বাই ২০ ফুট মাস্টার বেড রুমটি আগস্ট-২২ হতে ডিসেম্বর-২২ পর্যন্ত গিন্নির নিকট হতে বরাদ্দ নেওয়া হলো।
রুমটিতে জার্সি-পতাকা-ব্যানার টানানো, ছবির ফ্রেম বা পোস্টার লাগানোসহ হল্যান্ডের পর্দা, চাদর অন্যান্য সব রকম শোপিস রাখা যাবে। ’
লস্করের সংগ্রহে আছে ডাচ ফুটবল দলের ২৫টিরও বেশি জার্সি। ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত হল্যান্ডের রেট্রো জার্সি গুলি কালেকশনে রেখেছেন তিনি।
তার সংগ্রহে আছে ২০টিরও বেশি টি-শার্ট। এ ছাড়া নেদারল্যান্ডসের কালো ও নীল রঙের ক্যাপ, প্র্যাকটিস কিট, পানির পট, পানির মগ, প্লেট, বল, স্যান্ডেল, চাবির রিংসহ আরও অনেক কিছুই শোভা পাচ্ছে তার রুমে।
প্রিয় দল ও খেলোয়াড় প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৮৮ সালে আমার বয়স তখন আট বছর। ফুটবল খেলা মাত্রই বুঝতে শিখেছি, উপভোগ করতে শিখেছি।
ঠিক তখনই হল্যান্ড ফুটবল দলকে দেখেছিলাম ইউরো কাপ জিততে। রুড হুলিটের ইউরো কাপ উঁচিয়ে ধরার দৃশ্য আমাকে আজও আবেগতাড়িত করে তোলে। সেই থেকে রুড হুলিট আমার প্রিয় খেলোয়াড় ও হল্যান্ড আমার প্রিয় দল।
পেশায় একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা বদরুদ্দোজা লস্কর। বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে। বর্তমানে তিনি বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।
তিনি দৈনিক জবাবদিহি কে জানান, বিশ্বকাপের ফাইনালে ১৯৭৪, ১৯৭৮, ২০১০ সালে তিনবার ফাইনাল খেললেও বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে হল্যান্ড মেতে উঠতে পারেনি, যা খুব কষ্ট দেয়। ২০১০ সালের ঘটনাটি কখনো ভোলা সম্ভব না আমার পক্ষে।
হল্যান্ডের দলের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ডিফেন্স উল্লেখ করে লস্কর বলেন, তবে এবারের বিশ্বকাপে হল্যান্ডের বিশ্বকাপ জিতা নিয়ে আমি অনেক আশাবাদী। ইনশা আল্লাহ, এবার হল্যান্ডই বিশ্বকাপ নেবে।
তিনি জানান, বর্তমান দলে ভ্যান ডাইক এর মতো বিশ্বসেরা ডিফেন্ডার আছে, সঙ্গে আছে ডি লিট, নাথান আকে, ড্যাম্ফ্রাইস, মালাসিয়া এর মতো বিশ্বের অন্যতম ডিফেন্ডাররা।
মাঝমাঠে আছে বিশ্বসেরা ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং, ডি রুন, কোমপেয়ারস এর মতো খেলোয়াড়রা স্ট্রাইকিং এ আছে মেনফিস ডিপেই, গেগপো, নুয়া ল্যাং।
লস্কর বলেন, এই দলে বিশ্বকে চমক দেখানো মাত্র ১৯ বছর বয়সী সিমন্সও আছে, যে একাই খেলার মোড় ঘুরে দিতে পারবে ইনশা আল্লাহ। আমার আশা এবার সিমন্সই হবে বিশ্বকাপের সেরা তরুণ প্লেয়ার।
জ.দি/বাদশা