প্রকাশ: বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০২২, ৯:৩৪ অপরাহ্ন
বরগুনায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে শহরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ঘুরে শেষ পর্যন্ত রাস্তায় সন্তান প্রসব করেন এক গৃহবধূ। এতে নবজাতক আশঙ্কামুক্ত হলেও ওই প্রসূতির অবস্থা সংকটাপন্ন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের পশু হাসপাতালসংলগ্ন সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ওই প্রসূতির নাম রীমা বেগম (১৯)। তিনি সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি এলাকার রিকশাচালক মো. ইব্রাহিমের স্ত্রী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন গৃহবধূ রীমা বেগম। সন্ধ্যার পর তার প্রসববেদনা শুরু হয়। তখন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, হাসপাতালে গাইনি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা দেওয়া হয় না। তারা ওই গৃহবধূকে পৌর শহরের বটতলা এলাকার আলরাজি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যেতে বলেন। তাৎক্ষণিকভাবে ওই গৃহবধূর স্বজনেরা তাকে ওই ক্লিনিকে নিয়ে যান। কিন্তু আলরাজি ক্লিনিকে চিকিৎসক না থাকায় কর্তৃপক্ষ তাকে পশু হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
গৃহবধূর স্বজনেরা জানান, ওই ক্লিনিকেও চিকিৎসক না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় তাকে অন্য আরেকটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তায় নামানো হয়। তখন রাস্তায় ছেলেসন্তানের জন্ম দেন রীমা। পরে প্রসূতি ও নবজাতককে উদ্ধার করে শেফা ক্লিনিকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রসূতি রীমার অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সোহারাব হোসেন বলেন, ‘প্রসূতি ওই নারী গতকাল বেলা ১১টায় হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি হন। সন্ধ্যার পর তার প্রসববেদনা শুরু হয়। প্রসবের সময় বাচ্চা আটকে গেলে আমাদের ডেলিভারি সিস্টার ও নার্সরা তাদের জানিয়ে দেন, এখানে যে অবস্থা তাতে মায়ের ও বাচ্চার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে। আমাদের এখানে রাতে সিজারের (প্রসূতি অস্ত্রোপচারের) ব্যবস্থা নেই। আপনারা কোথাও গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ জান্নাতুল আলম বলেন, তিনি দায়িত্ব শেষে বাসায় গিয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পর খবর পান, হাসপাতাল সড়কে এক নারী সন্তান প্রসব করেছেন এবং তাকে উদ্ধার করে তাদের ক্লিনিকে আনা হয়েছে। তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে ওই প্রসূতির খোঁজখবর নেন। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তার অবস্থা গুরুতর ছিল। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। নবজাতক সুস্থ আছে।
-জ/আ