প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ৩:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ১০:১৫ অপরাহ্ন

মাত্র ১২০ টাকায় ফরম পূরণ করে চাকরি পেয়েছেন ঝিনাইদহের ২৫ জন বেকার যুবক ও যুবতী। কোনো ঘুষ, তদবির কিংবা অনিয়ম ছাড়াই চাকরি পাওয়ায় অনেকেই আবেগে কেঁদে ফেলেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের মুখে এখন আশার আলো, কণ্ঠে কৃতজ্ঞতার কথা।
গতকাল বুধবার (১৪ মে) রাত ১০ টায় ঝিনাইদহ পুলিশ লাইন্স ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য চলতি প্রক্রিয়ায় মোট আবেদন করেন ১,৭৪১ জন। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ২৭৭ জন। লিখিত পরীক্ষায় পাস করেন ৬৯ জন। পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্তভাবে ২৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়, যার মধ্যে একজন নারী। পাশাপাশি অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে আরও ৫ জনকে।
চাকরীর খবর পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন কোটচাঁদপুর উপজেলার জয়দিয়া গ্রামের অশোক হালদারের মেয়ে শিমলা হালদার।
অশোক হালদার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আজকে আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন। কোনো ঘুষ কিংবা তদবির ছাড়াই আমার মেয়ের চাকরি হয়েছে। আজ নিজ চোখে দেখে কৃতজ্ঞতা জানাই ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশকে।
সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের লাল চানের ছেলে আসিক ইকবাল বলেন, ঘুষ ছাড়াই চাকরি পাওয়া যাবে এটা ভাবিনি। যখন নিজের নাম শুনলাম, চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনি।
তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে আরো বলেন, দরিদ্র ঘরে জন্ম, অনেক কষ্টে বড় হওয়া। আজ আমার স্বপ্ন পূরণ হলো। কৃতজ্ঞতা জানাই ঝিনাইদহ জেলা পুলিশকে।
এসময় উপস্থিত যুবক-যুবতীরা তাদের চাকরীর খবরে আনন্দে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন, তৈরী হয় এক আবেগঘন মহূর্ত।
অনেক প্রার্থী জানান, দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর এমন সুযোগ তাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। চাকরি পেয়ে পরিবারেও এসেছে স্বস্তি ও আনন্দের বার্তা। তারা দেশের সেবা ও মানুষের পাশে থেকে মানবিক পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে চান।
জেলা পুলিশ সুপার মনজুর মোরশেদ বলেন, শারীরিক সক্ষমতা, মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে শতভাগ স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। কোনো ধরনের তদবির, ঘুষ বা রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়াই যোগ্যদের সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে।
চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের ব্রিফিংকালে পুলিশ সুপার আরও বলেন, সততা, নিষ্ঠা ও মানবিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।