কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জিঞ্জিরাম ও ধরনী নদীর পানি কমার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙন। এতে নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে ফসলি জমি ও নিঃস্ব হয়েছে ১৫টি পরিবার। ভিটেমাটি হারিয়ে তারা বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গত ১ সপ্তাহ ধরে জিঞ্জিরাম ও ধরনী নদীর পানি কমার সাথে সাথে তীব্র হচ্ছে নদীর ভাঙন।
ইতিমধ্যে ভাঙনে বিলিন হয়েছে ১৭টি বাড়ী ও কয়েক একর ফসলি জমি। এতে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের চুলিয়ারচর, ঝাউবাড়ী, বড়াইবাড়ী, বারবান্দাসহ ৭টি গ্রামের ২৫টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো রাস্তার পার্শে ছাপড়া ঘর উঠিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
চুলিয়ারচর গ্রামের স্থানীয় বুধু মিয়াসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এলাকাটি সীমান্ত ঘেষা হওয়ায় আমদের কেউ দেখতে আসে না। এখানে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ঘরে খাবার না থাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলোর পার্শে দাড়ায়নি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। এভাবে জিঞ্জিরাম ও ধধরনী নদীতে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের ফসলি জমি ও ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তাদের দাবি দ্রæত ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া।
এদিকে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ান বোর্ড বলছে প্রকল্প না থাকায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
চুলিয়ারচর গ্রামের সবুর মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, নদীর ভাঙ্গন বাড়ির কাছে আসায় অনেক আতংকে থাকি। কখন যেনো ভেেেঙ্গ যায়। আমরা এক সময় ধনী ছিলাম কিন্তু নদীতে ভাঙার কারণে আমরা গরিব হয়ে গেছি এখন অর্থের অভাবে কোথাও ঘর উঠাতে পারছিনা এবং ঘরে খাবারো নাই। কাউকে বলতে পারছিনা। কেউ আমাগরে দেখতে আসে নাই। বড়াইবাড়ী গ্রামের আমজাদ হোসন বলেন, জিঞ্জিরাম ও ধরনী নদী পানির কমার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙন। এতে গত এক সপ্তাহে নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে ১৭টি বাড়ি ও কয়েক একর ফসলি জমি। এ নদী ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কাজ না করলে ভয়াবহ পরিস্থির সৃষ্টি হতে পারে। তাই সরকারের কাছে দাবী, নদীটা যেন বাইন্দা দেয়।
ঝাউবাড়ী গ্রামের সমিজল বলেন, আমাগরে বাড়ি ভিটা নদীতে ভেঙ্গে গেছে। নদীর পাশেই অন্যের জমিতে ঘর উঠিয়ে বসবাস করছি। আমাদেরকে কেউ দেখতে আসে নাই। আমররা খুবই কষ্টে আছি। সরকারের কাছে দাবী, নদীটা যেন বাইন্দা দেয়।
রৌমারী সদর ইউপি পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল রাজ্জাক বলেন, জিঞ্জিরাম ও ধরনী নদীর পানি কমার সাথে সাথে ব্যাপক নদী ভাঙছে। ভাঙন এলাকা টি সীমান্ত ঘেষা হওয়ায় যাওয়া কম হয়। তবে আমি প্রতিনিয়ত খোজখবর রাখছি তাদের।
উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামসুদ্দিন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের মাঝে ১০ কেজি করে চাউল বিতরণ করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, জিঞ্জিরাম ও ধরনী নদীর পানি কমার সাথে সাথে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে এখানে বরাদ্দ না থাকায় কোন কাজ করা যাচ্ছে না। এই নদীর ভাঙন রোধের স্থায়ী সমাধনের জন্য প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। বরাদ্দ আসলেই কাজ করা হবে।