প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩, ৭:৫৮ অপরাহ্ন
শার্টের বোতামের সূত্র ধরে দাগনভূঞা বারাহিগোবিন্দ গ্রামে গৃহবধূ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, প্রধান আসামীসহ হত্যাকান্ডে জড়িত ০৩ জন আসামী গ্রেফতার, আলামত উদ্ধার ও আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি প্রদান।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তাহারা জানায়, মামলার প্রধান আসামী মোবারক হোসেন মামলার ভিকটিম মমতাজ বেগম প্রঃ পারুল এর পূর্ব পরিচিত। আসামী মোবারক হোসেন মাঝে মধ্যে ভিকটিমের বাড়ীতে গাছের ডাল কাটা এবং নারকেল সুপারি পারার কাজ করতো। আসামী মোবারক হোসেন, আব্দুল আউয়াল প্রঃ সাদ্দাম এবং ইয়াব হোসেন শুভ পূর্ব পরিচিত।ঘটনার দিন গত ১৩/১২/২০২৩ ইং তারিখ সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর পর আসামী মোবারক হোসেন, আব্দুল আউয়াল প্রঃ সাদ্দাম এবং ইয়াব হোসেন শুভ ভিকটিমের বাড়ীর পাশে বিলে ভিকটিমের বাড়ীতে টাকা পয়সা ও জিসিনপত্র লুন্ঠনের পরিকল্পনা করে।
এরপর আসামীরা ভিকটিমের বাড়ীতে যায়। ভিকটিমের বাড়ীতে গেলে আসামী মোবারক হোসেন ভিকটিমকে নানু নানু বলিয়া দরজায় কলিং বেল দিতে থাকে। আসামী মোবারক হোসেন এর ডাকে সাড়া দিয়ে ভিকটিম মমতাজ বেগম প্রঃ পারুল দরজা খুলে দেয়। ভিকটিম দরজা খুলে দিলে আসামী মোবারক হোসেন প্রথমে ঘরে প্রবেশ করে এবং তার পিছু পিছু আসামী শুভ লাঠি নিয়ে ও সাদ্দাম দা" নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে।
ভিকটিমের ঘরে প্রবেশ করার পর আসামী মোবারক হোসেন ভিকটিমের ডাইনিং রুমের চেয়ারে ভিকটিমের পাশে বসে। অপর ২জন আসামী ভিকটিমের রুমের লাইট বন্ধ করে দেয় এবং ভিকটিমকে তার কাছে যা আছে তা দিয়ে দিতে বলে। আসামী মোবারক হোসেন ভিকটিমের ঘরে থাকা ব্যাংকটি গ্যাস লাইট দিয়ে জ্বালিয়ে ও কেটে অনুমান ৫,০০০/- টাকা নিয়ে নেয়। এরপর ভিকটিম থরথর কাপাকাপি শুরু করে অন্য রুমে চলে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। ভিকটিম মমতাজ বেগম তার হাতে থাকা মোবাইল নিয়ে তার ছেলের বউয়ের রুমে প্রবেশ করে দরজা লাগানোর চেষ্টা করলে আসামী শুভ তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে ভিকটিমের মাথায় স্বজোরে আঘাত করলে ভিকটিম ফ্লোরে পড়ে গেলে আসামী শুভ ভিকটিম মমতাজ বেগমের হাত থেকে মোবাইলটি নিয়ে নেয়। আসামী মোবারক হোসেন ভিকটিমের মুখ চেপে ধরলে ভিকটিমের সাথে আসামী মোবারক হোসেন ধস্তাধস্তিতে মোবারক হোসেনের গলায় এবং হাতে ভিকটিমের আছড়ের দাগ লাগে এবং মোবারক হোসেন ভিকটিমের হাত তার শরীর থেকে ছাড়ানোর জন্য ভিকটিমের হাতে একাধিক এলোপাথাড়ি কামড় দেয়। ধস্তাধস্তিতে আসামী মোবারক হোসেনের পরিহিত শার্টের ০২টি বোতাম ভিকটিমের লাশের পাশে পড়ে যায়। একপর্যায়ে আসামীগণ ভিকটিমের গলায় পায়জামা প্যাছিয়ে শ্বাসরোধ করে ভিকটিমেকে হত্যা করে। ভিকটিম নিস্তেজ হয়ে জিব্বায় কামড় লেগে গেলে আসামীরা ভিকটিমের কানের দুল, মোবাইল এবং আলমারী হতে ৫,০০০/- টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
এই বিষয়ে দাগনভূঞা থানার ওসি জানান, আসামীকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা পুলিশ সুপার জাকির হাসান এর বিশেষ নির্দেশনা ছিল। সেই মতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) শাহাদাত হোসেন তত্বাবধানে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাছলিম হুসাইন এর নেত্বত্বে দেন।
এতে দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাশিম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাসেল মিয়া, এসআই রাশেদুল হক ও এসআই মো. আজমগীর এর সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টিম গোপন সূত্রের ভিত্তিতে দাগনভূঞা ও ফেনী থানা এলাকায় এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।