রাইড শেয়ারিং নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ রযেছে। বিআরটিএকে এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে এবং সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের সভাকক্ষে রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়নের সদস্য এবং রাইড কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, রাইড শেয়ারিং নিয়ে আমাদের কাছে অসংখ্য অভিযোগ আসে। নিয়ন্ত্রণহীন রাইড শেয়ারিংকে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। রাইড শেয়ারিং নিয়ে সব থেকে বেশি অভিযোগ আসে রাইড রিকোয়েস্ট পাওয়ার পর। চালক কর্তৃক যাত্রীর নিকট ফোনে গন্তব্য জানতে চাওয়া এবং গন্তব্য পছন্দ না হলে রিকোয়েস্ট ক্যান্সেল করে দেন। এমনটা কেন হবে? এটা তো সম্পূর্ণ আইনের পরিপন্থী। এছাড়াও চালকরা শুধু গাড়ি দিয়ে ভাড়াই আদায় করেন, নিজের গাড়িটাকেও তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন না।
তিনি আরও বলেন, বিআরটিএ থেকে বলা হয়- রাইড শেয়ারে নিবন্ধিত নির্ধারিত চালক ও গাড়ি ব্যবহার করা হয় না। এমনটা কেন হবে? এমনকি, রাইড শেয়ারিং কর্তৃপক্ষ আলোচনা ছাড়াই বিভিন্ন নিয়ম পরিবর্তন করে চালকদের ওপর চাপিয়ে দেন। কিন্তু চালকদের নিরাপত্তায় রাইড শেয়ারিং কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত কোনো ব্যবস্থা নেয় না।
রাইডারদের অভিযোগ, কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই রাইড শেয়ারিং কর্তৃপক্ষ একতরফাভাবে চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে, এটিও অন্যায়। রাইড শেয়ারের ভাড়া নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা আছে। পিক/অফপিক আওয়ারের ভাড়া নির্ধারণে ভোক্তারা প্রতারিত হয়ে থাকেন।
এসময় ঢাকা রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়নের সভাপতি রাজেশ খান বলেন, রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো বিশেষ করে উবার শুরু থেকেই কয়েক ধরনের প্রমো ও মাসে ৮০ হাজার টাকা আয়ের নিশ্চয়তামূলক বিভিন্ন চমকপ্রদ প্রচারণা শুরু করে, ফলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার চালকরা এটিকে পেশা হিসেবে নিতে শুরু করে। কেউ প্রাইভেটকারের চাকরি ছেড়ে, কেউ ট্যাক্সি চালানো ছেড়ে, কেউ বা রেন্ট-এ-কার ছেড়ে, এমনকি কোনো কোনো শিক্ষিত বেকার যুবকও জুতসই চাকরি না পেয়ে এ প্লাটফর্মকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক প্রবাসী ভাই আছেন, যারা আর প্রবাসে না গিয়ে তাদের কষ্টার্জিত পুঁজি দিয়ে একটি গাড়ি কিনে এ পেশায় নেমে আসেন। আমাদের বহু চালক আছেন যাদের কেউ তাদের পৈত্তিক সম্পত্তি বিক্রি করে অথবা ধার-দেনা করে আবার কেউ বা মোটা অংকের সুদে লোন করে গাড়ি কিনেও এ পেশায় যুক্ত হন। যাদের প্রত্যেকেই আজ ঋণের দায়ে জর্জরিত।
রাজেশ খান আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা করে গাড়ি চালিয়ে একদিকে যেমন আমরা নিজ শরীর-স্বাস্থ্যকে ধ্বংস করছি, অন্যদিকে আমাদের সব হারানোর শেষ পুঁজি গাড়িটিকেও জর্জরিত করছি। গাড়ির এমন অবস্থা যে, এটিকে বর্তমানে তিনবার বিক্রি করলেও আমাদের ঋণ শোধ করা অসম্ভব।
জ/আ