প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২, ১১:৩৮ অপরাহ্ন
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি ও নেপালি শ্রমিক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে দেশটির সরকারকে সেবাদানকারী তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি বেস্টিনেটের শীর্ষ নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (সিইও) মোট আটজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন এমসিসি। গতকাল বুধবার (৩ আগস্ট) বেস্টিনেটের সিইও দাতো মোহাম্মদ আমিনসহ কোম্পানির আট কর্মকর্তাকে এমসিসি গ্রেপ্তার করে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার অনলাইন।
যেসব দেশ থেকে শ্রমিক নেয় মালয়েশিয়া, সেসব দেশের জন্য কোটা নির্ধারিত রয়েছে মালয়েশিয়ায়। বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত কোটায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কোটা পূরণে বাংলাদেশের ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির একটি সিন্ডিকেটের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বেস্টিনেট নিয়েছে বলে অভিযোগ।
মালয়েশিয়ার সংবাদপত্র দ্য স্টার জানিয়েছে, বিদেশি শ্রমিকদের জন্য কোটা অর্জনে নিয়োগকর্তা বা এজেন্টদের সহযোগিতা করতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে গতকাল বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গেছে, প্রতি শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশি টাকায় ১৭ হাজার থেকে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন তারা।
এই অর্থে মোট পরিমাণ এখনও জানা যায়নি, তবে এমসিসির একটি সূত্র দ্য স্টার অনলাইনকে অবহিত করেছে— চলতি মেয়াদে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যত সংখ্যক শ্রমিক নেবে, সেই হিসেবের প্রত্যেক শ্রমিকের মাথাপিছু বাংলাদেশি টাকায় ১৭ থেকে ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছে বেস্টিনেট।
প্রতিবেদন অনুসারে, গত মে মাস থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮৬১টি আবেদন প্রক্রিয়া করেছে বেস্টিনেট।
বেস্টিনেট ফরেন ওয়ার্কার্স সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এফডব্লিউসিএমএস) নামে পরিচিত একটি ব্যবস্থাপনা দেখভাল করে থাকে। এই সিস্টেমটি ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের জন্যও ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এই কাজে প্রতি শ্রমিকের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত গ্রহণের অভিযোগে মালয়েশিয়া সরকার এই নিয়োগ স্থগিত করে। সে সময় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়া সরকার ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির একটি সিন্ডিকেটকে অনুমতি দেয়।
বুধবারের গ্রেপ্তারের ঘটনা এই কারণে তাৎপর্যপূর্ণ, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের জন্য ২ দেশের সরকার কাজ করলেও এই কাজে মালয়েশিয়া সরকারের প্রস্তাবিত ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেশনের অভিযোগ আছে। বাংলাদেশ সরকারসহ বেশিরভাগ রিক্রুটিং এজেন্সি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই সিন্ডিকেশনের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। কারণ, এতে অভিবাসন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শ্রমিকদের নির্যাতিত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
-জ/আ