চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ঢাকা আসছেন। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী মাসের শুরুতে তার সফরটি হতে পারে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাবিত সফর চূড়ান্ত করতে ঢাকাস্থ চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং গত রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে জরুরি সাক্ষাৎ করেন। সেই বৈঠকে তারা সফর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ঢাকা প্রস্তুত বলে বৈঠকে উল্লেখ করে সফরটি বেইজিং প্রস্তাবিত ৫ থেকে ৬ আগস্টের বদলে দু’দিন পেছানোর অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ।
কারণ ৪ থেকে ৬ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন পূর্ব নির্ধারিত কম্বোডিয়া সফরে থাকছেন। নমপেনে অনুষ্ঠিত ৫৫তম আসিয়ান ফরেন মিনিস্টার্স মিটিংয়ে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি। ৭ আগস্টে মন্ত্রীর ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।
তবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যদি ৭ আগস্ট ঢাকায় আসেন সে ক্ষেত্রে মোমেন তার নমপেন সফর সংক্ষিপ্ত করে একদিন আগেই ফিরবেন বলে চীনা দূতকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক সঙ্গে এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফর করছেন। ফলে তার শিডিউলে পরিবর্তন আনা কঠিন।
তারপরও চীনা দূতাবাস ঢাকাকে আশ্বস্ত করেছে তারা মন্ত্রী মোমেনের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেই শিডিউল চূড়ান্ত করতে যথাসম্ভব চেষ্টা করবে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরটি উজবেকিস্তান দিয়ে শুরু হবে জানিয়ে বলা হয়, তাসখন্দে আগামী ২৮ ও ২৯ জুলাই সাংহাই কো-অপারেশন অরগানাইজেশন এসসিও’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নিবেন তিনি। ওই সম্মেলনের সাইড লাইনে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। মধ্যখানে ৫ দিন অন্য দুটি দেশে কাটিয়ে ঢাকা আসতে চান ওয়াং ই।
বাংলাদেশ সফরের পরে তার মঙ্গোলিয়া সফরের শিডিউল রয়েছে জানিয়ে ঢাকার এক কর্মকর্তা জানান, সে ক্ষেত্রে মঙ্গোলিয়া সফরটি এগিয়ে নেয়া এবং বাংলাদেশ সফর দু’দিন পিছিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করেছে ঢাকা।
চীনের তরফে এখনো তার জবাব আসেনি জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, দিনক্ষণ যাই হোক সফরটি হবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। কর্মকর্তারা বলছেন, নানা কারণে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ঢাকা সফরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এটি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের কৌশলগত উন্নয়ন অংশীদার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাবিত সফরে অবধারিতভাবে রাজনীতি ও অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে আলোচনা হবে। দেশটির সঙ্গে সম্পাদিত ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় আসবে। বাণিজ্যিক ঋণ চুক্তি ও প্রকল্প সহায়তার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে। চলতি মাসে মিয়ানমার সফর করা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে অবধারিতভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আলোচনায় তুলবে বাংলাদেশ।
-জ/অ