ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। এ কারণে সেচ সুবিধার অভাবে দুই উপজেলার অন্তত ১ হাজার হেক্টর জমিতে এবারের বোরো আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পরশুরাম উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, পানি সংকটের কারণে পরশুরাম কোলাপাড়া, বাঁশপদুয়া, খোন্দকিয়া, বাউরখুমা, বাউরপাথর, বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের টেটেশ্বর, দক্ষিণ টেটেশ্বর, চিথলিয়া ইউনিয়নের কিসমত ঘনিয়া মোড়া, চিথলিয়া, রাজষপুর, শালধর, ধনিকুন্ডা, ১০টি গ্রামের বোরো চাষ ব্যাহত হচ্ছে।
পরশুরাম উপজেলায় চলতি বছর ৩ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আর ফুলগাজীতে ৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কিন্তু নদীর পানি সংকটে অন্তত ১ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
পরশুরাম পৌর এলাকার কোলাপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল খায়ের জানান, মুহুরী নদীর উজানের অংশে ভারত সীমান্তে পানি আটকে দিচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশ অংশে বাজারের পোলট্রি খামারের ময়লা আবর্জনা ফেলাসহ নানা কারণে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে নদী শুকিয়ে গেছে। তবে প্রতি বছরের মতো এবারও নদীর মোহনায় বাঁধ দিলে এ সমস্যার আপাত সমাধান হবে।
পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার অন্তত ১৫-২০ জন সেচপাম্প মালিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, জরুরিভিত্তিতে পরশুরামের মুহুরী ও কহুয়া নদীর মোহনায় অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করলে পৌর এলাকার বক্সমাহমুদ ও চিথলিয়ার এবং ফুলগাজী উপজেলার কয়েকশ কৃষকের রবি মৌসুমে বোরো ধান চাষাবাদে সেচ পানির সংকট দূর হবে।
পরশুরাম উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের বাগমারা এলাকার সেচ পাম্প মালিক মো. মোস্তফা শামীম ও মো. হানিফ জানান, তাঁদের গ্রামের বেশির ভাগ জমিতে পানি দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
ফুলগাজী উপজেলার সেচ পাম্প মালিক আলমগীর হোসেন জানান, তাঁর তিনটি সেচপাম্প রয়েছে। তাঁর জমি ভাটি অঞ্চলে। কহুয়া নদীর উজানের অংশে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। এতে ঘনিয়া মোড়া, টেটেশ্বর, তালবাড়ীয়া, জগৎপুর এলাকায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান করতে পরশুরাম উপজেলার সেচ পাম্প মালিকদের নিয়ে পরশুরাম উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন।
পরশুরাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, পরশুরামে চলতি মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় অন্তত ১ হাজার হেক্টর জমির চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরশুরাম পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল জানান, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বিষয়ে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।