
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে-অফের প্রথম লেগে শেষ মুহূর্তের গোলে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। গতকাল মঙ্গলবার ম্যানসিটির ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে দুইবার পিছিয়ে পড়ার পর প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ৩-২ ব্যবধানের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে কার্লো আনচেলত্তি শিষ্যরা।
সিটির হয়ে জোড়া গোল করেন আরলিং হালান্ড। নরওয়েজিয়ান তারকার গোল দুটিকে বিফল করে দেন রিয়ালের তিন তারকা কিলিয়ান এমবাপে, ব্রাহিম দিয়াজ ও জুড বেলিংহ্যাম।
হালান্ড ম্যাচের ১৯ মিনিটে রিয়ালের বিপক্ষে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম গোলটি করেন। জোসকো গার্দিওলের কাছে থেকে বল পেয়ে ২৪ বছর বয়সী নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার দুর্দান্ত শটে জালে পাঠান। ভিএআর চেকের কারণে চার মিনিট দর্শকদের অপেক্ষায় থাকতে হয়। তবে শেষ পর্যন্ত গোলটি লেখা হয় ম্যানসিটির নামের পাশেই।
এমবাপে ৬০ মিনিটে রিয়ালকে সমতা ফেরান। ফ্রি-কিক থেকে ফিরতি আসা বল অদ্ভুতভাবে পায়ে লাগিয়ে ম্যানসিটির গোলরক্ষক এডারসনের ওপর দিয়ে জালে পাঠান ফরাসি তারকা।
এরপর হালান্ড ৮০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন। এতে আবাররও লিড নেয় সিটি (২-১)। ফিল ফোডেনকে ডি-বক্সের ভেতর দানি সেবালোস ফাউল করলে সিটি পেনাল্টি পায়। হালান্ড ঠাণ্ডা মাথায় শট নিয়ে গোলরক্ষক থুবো কর্তোয়াকে ভুল দিকে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য করেন। এ নিয়ে ৪৯ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে ৪৮তম গোল করেন হালান্ড।
চলতি মৌসুসে শেষ দিকে লিড ধরে রাখতে না পারা সিটির বড় রোগে পরিণত হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচগুলোতে শেষ ১৫ মিনিটে তারা ৭টি গোল হজম করেছে। মঙ্গলবার রাতেও ব্যতিক্রম হলো না।
৮৬ মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের শট ঠেকাতে ব্যর্থ হন সিটির গোলরক্ষক এডারসন। ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষকের হাত থেকে ফসকে যাওয়া বল পেয়ে যান সাবেক সিটি খেলোয়াড় দিয়াজ। সুযোগটি পুরোপুরি লুফে নে তিনি এবং কাছ থেকে শট নিয়ে গোল করেন। এতে ২-২ সমতায় রিয়াল।
৯২ মিনিটে রিয়ালের জয়সূচক গোলটি করেন ইংল্যান্ডের মিডফিল্ডার বেলিংহ্যাম। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের অ্যাসিস্ট থেকে গোল করেন তিনি। এতে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিয়াল।
ম্যাচের পর দিয়াজ বলেন, ‘আমি গোল করে এবং দলের জন্য অবদান রাখতে পেরে খুশি। আমরা একটি দুর্দান্ত ম্যাচ খেলেছি। এখানে এত ভালো একটি দলের বিরুদ্ধে খেলা সহজ নয়। তবে দ্বিতীয় লেগ এখনো বাকি; কাজ শেষ হয়নি।’
বেলিংহ্যাম বলেন, ‘এটি সত্যিই অদ্ভুত ম্যাচ ছিল। আমরা মৌসুমের সেরা ফুটবল খেললাম। অথচ (শুরুতে) পিছিয়ে পড়েছিলাম। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে সুযোগ আসবেই। সিটি যে ফর্মেই থাকুক না কেন, তারা সবসময়ই অবিশ্বাস্য দল। তাদের বিরুদ্ধে খেলা সবসময় কঠিন। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা সুযোগটা কাজে লাগিয়েছি।’
সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা বলেন, ‘বারবার খেলার কারণে এটি এখন একপ্রকার ডার্বির মতো অনুভূত হচ্ছে।’
সিটির ডিফেন্ডার জন স্টোনস হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দুটি ভুলের কারণে হেরে গেলাল। আমাদের আরও ভালোভাবে ম্যাচ শেষ করতে হবে। আজ আমরা দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিলাম ২-১ লিড নিয়ে বার্নাব্যুতে যাওয়ার। তবে সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। ইতিবাচক থাকতে হবে, যদিও এখন তা কঠিন।’
দুই ইউরোপিয়ান ফুটবল পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ দ্বিতীয় লেগ আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।