প্রকাশ: রোববার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:২২ অপরাহ্ন

ঢাকা ও ইসলামাবাদ পাঁচ দশকের বেশি সময় পর সরকারি পর্যায়ে সরাসরি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পুনরায় শুরু করেছে। ১৯৭১ সালের পর এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে সরাসরি পণ্য আমদানি করছে।
সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পর্যায়ের এই বাণিজ্যের আওতায় পাকিস্তানের পোর্ট কাশিম থেকে প্রথম চালান রওনা হয়েছে, যা আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে পৌঁছাবে।
আজ রোববার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) পোর্ট কাশিম থেকে এমভি সিবি নামের একটি বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ ২৬ হাজার টন চাল নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। এটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে ৪ মার্চ। এর মাধ্যমে পাঁচ দশক পর আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য পুনরায় চালু হলো।
এর আগে চলতি ফেব্রুয়ারির শুরুতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়। এই চুক্তির আওতায় ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তান (টিসিপি) থেকে মোট ৫০ হাজার টন চাল কিনছে বাংলাদেশ। দুটি ধাপে এই চাল বাংলাদেশে আসবে, যার প্রথম চালান ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে এবং দ্বিতীয় চালান আগামী মাসের শুরুতে পাঠানো হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উষ্ণ হয়েছে। বিশেষ করে গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান, কূটনৈতিক সফর এবং উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরিমাণ বেড়েছে। পাকিস্তানের ব্যবসায়ী মহল আশাবাদী, আগামী এক বছরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ তিন বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে, যা বর্তমান সময়ের তুলনায় চার গুণ বেশি।
এছাড়া উভয় দেশের মধ্যে সম্প্রতি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ গত এক বছরে দুবার বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকেই বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন এই বাণিজ্যিক সংযোগ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে বাণিজ্যের পথ উন্মুক্ত করবে।