ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে রাস্তার পাশে মাটি কেটে বিক্রি করায় নির্মানাধীন রাস্তা গভীর পুকুরে ধ্বসে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসী ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক, নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি ময়মনসিংহ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা যায়, উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের কাশিগঞ্জ থেকে লতিফ মার্কেট পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের কার্যাদেশ পায় সোহেল এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান। ৫নভেম্বর-২৩ তারিখে রাস্তাটির ভিত্তি প্রস্তরস্থাপন করা হয়। ভিত্তি প্রস্তরস্থাপনের কিছু দিন পর তৎকালীন দলীয় প্রভাবশালী নেতার মালিকানাধীন মাছ চাষের পুকুরের মাটি কেটে বিক্রি করে দেয়।
এ কারণে পুকুরটি গভীর হয়ে যায়, ফলে রাস্তাটি পুকুরে ধ্বসে পড়ে। এসময় স্থানীয় এলাকাবাসী বাঁধা নিষেধ করলেও পুকর মালিক দলীয় প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় বাঁধার তোয়াক্কা করেননি।
স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী কৈফিয়ত তলব করলে ফিসারী মালিক মশিউল হাসান নিজ উদ্যোগে মাটি ভরাট করে দেয়ার অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করেন। পরে তিনি রাস্তার পাশে কয়েকটি বাঁশের খুঁটি দিয়ে মাটি ফেলে নামকা ওয়াস্তে একটি দায়সারা কাজ সম্পন্ন করেন। যা রাস্তাটি আবারো ধ্বসে যাওয়ার আশংখা করছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় আব্দুস সামাদ জানান, এ রাস্তাটির জন্য আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। বর্ষাকালে বাড়ি থেকে বের হওয়া মুশকিল হয়ে যায়। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত স্কুলেও যেতে পারেনা এ রাস্তার কারণে। এই রাস্তার কারণে আমাদের সাথে অনেকেই আত্নীয়তা করতে চায়না। দীর্ঘদিন পরে স্বপ্নের এ রাস্তাটির কাজ শুরু হলেও শেষ হওয়ার আগেই স্বপ্ন ভেঙ্গে পুকুরে ধ্বসে যায়।
শহিদুল ইসলাম বলেন আমরা এলাকাসীর চাই এ রাস্তাটির পাশে যেন প্যালাইটিং দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়। তাহলে আমরা অনেক উপকৃত হবো।
এবিষয়ে পুকুর মালিক মশিউল হাসান জানান, ২০০৯ সাল থেকেই এখানে পুকুর ছিল। কিছুদিন পূর্বে মাটি বিক্রি করা হয়েছে। খনন কর্মচারীরা ৩ফুট করে মাটি কাটার কথা থাকলেও তারা ৫ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যায়। আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না।
রাস্তার ঠিকাদার সরাফত আলী জানান, রাস্তার পাশ ঘেঁষে পুকুর খননের বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
উপজেলা প্রকৌশলী আয়েশা আক্তার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পুকুর মালিক রাস্তার পাশে নিজ উদ্যোগে মাটি ভরাট করে দিবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।