প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪, ২:২৫ অপরাহ্ন
মাদারীপুরে দুদিনে নাশকতাকারীদের হামলায় সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা মিলিয়ে প্রায় ৪০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে এসেছে।
জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাজমুল ইসলাম।
গতকাল বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাজমুল ইসলাম জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) ও শুক্রবার (১৯ জুলাই) কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনে ঢুকে পড়ে একদল দুর্বৃত্ত। এসময় নাশকতাকারীরা জেলা জুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।এতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়,জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, ট্রাফিক পুলিশ বক্স,কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে ব্যাপক ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।এছাড়া দুর্বৃত্তরা সার্বিক তেলের পাম্প, সার্বিক বাস ডিপোতে থাকা ৩৮(আটত্তিশ)টি বাস, পুলিশ ফাঁড়ি ও পৌর মুক্তিযোদ্ধা কমিউনিটি সেন্টার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এই ঘটনায় গত শনিবার (২০ জুলাই) জেলা প্রশাসন থেকে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী বাদল চন্দ্র কীর্ত্তনীয়া এবং বিআরটিএ’র সহকারি পরিচালক মোঃ নূর হোসেন।
কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে গত মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে জেলা প্রশাসনের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন।
উল্লেখ্য,কোটা সংস্কার আন্দোলনে মাদারীপুরে ছাত্রলীগ, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়।এতে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয় শহরের বিভিন্ন এলাকা। হামলায় অংশ নেয় শত শত মানুষ। এতে রোমান বেপারী ও তাওহীদ নামে দুজন মারা যান। এছাড়া পুলিশের তাড়া খেয়ে লেকের পানিতে ডুবে দীপ্ত দে নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।এসব হামলায় পুলিশসহ শতাধিক জন আহত হয়।
এসব ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় দুই শতাধিক মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি রয়েছে দেড় থেকে দুই হাজার। তবে এখন পর্যন্ত নাশকতার দায়ে ৮২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জেলায় কারফিউ জারির পর জনমনে স্বস্তি ফিরলেও আতংক পুরোপুরি কাটেনি।শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।এছাড়া সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা জেলা জুড়ে টহল দিচ্ছে।