হল ত্যাগের ঘোষণা প্রত্যাহারের দাবিতে বশেমুরবিপ্রবি ভিসির বাংলো ঘেরাও
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
প্রকাশ: বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪, ৭:২১ অপরাহ্ন
সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলায় নিহত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বশেমুরবিপ্রবিতে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ বুধবার বিকালে।
এছাড়াও গোপালগঞ্জের বশেমুরবিপ্রবি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেয়নি।
তারা আজ বিকাল ৫টার মধ্যে ছাত্র এবং আগামীকাল সকাল দশটার মধ্যে ছাত্রী হল ছাড়ার ঘোষণা হয়েছে জেনে ভিসি একিউএম মাহাবুবের বাংলো ঘেরাও করে। ভিসি তখন বাংলো থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীরা ভিসিকে ছয় ঘন্টা অর্থাৎ আজ মধ্যরাত পর্যন্ত সময় দিয়েছে হল ছাড়ার ঘোষণা প্রত্যাহার করার জন্য।
শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে হল তারা ছাড়বে না। তারা এসময় শ্লোগান দেয়, হয়তো হলে থাকতে দে নয়তো বাংলো ছেড়ে দে, বলে।
আজ বশেমুরবিপ্রবি ক্যাম্পাসের একটি দেয়ালে হাতে লেখা একটি পোষ্টার দেখা গেছে যাতে লেখা রয়েছে, হল ছাড়ার নির্দেশ দিলে ভিসিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া করব কথা দিলাম ছাত্র সমাজ।
বিকাল চারটার দিকে গোপালগঞ্জ জেলা শহরে জেলা ছাত্রলীগ একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে। মিছিলে অংশ নেয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা, শেখ হাসিনার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে, বলে শ্লোগান দেয়।
এদিকে চাকুরীতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবীতে, বিভিন্ন ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী নিহত ও আহত হওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল মংগলবার বিকালে লাঠি হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলে অংশগ্রহনকারী প্রায় সকল ছাত্র ও ছাত্রীর হাতে লাঠি দেখা গেছে। তবে সাধারন শিক্ষার্থীরা নিরাপদে তাদের দাবী আদায়ের লক্ষ্যে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি করতে পেরেছে। তারা দুই ঘন্টার বেশি সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
কর্মসুচি চলাকালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বশেমুরবিপ্রবি শাখার সমন্বয়ক মো.জসীমউদ্দিন নতুন বলেন, আমরা রাজপথে আছি থাকবো। আমাদের এক দফা দাবী আদায় করে ঘরে ফিরবো।
সাধারন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষকরা সন্ধ্যার পর থেকে প্রতিটি গেটে পাহারা দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। মধ্যরাতের পর প্রক্টর মো: কামরুজ্জামানকে দেখা গেছে বশেমুরবিপ্রবি প্রধান ফটকে পাহারা দিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজেদের দাবী আদায়ে আন্দোলন করছে। একই সাথে শিক্ষার্থীদের কোটা প্রথা বাতিলের দাবীতে চলমান আন্দোলনকে বেগবান করেছে বলে মনে হয়। বশেমুরবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের কোন কমিটি না থাকলেও ছাত্রলীগ করে এমন শিক্ষার্থী প্রচুর রয়েছে। তারা ক্যাম্পাসের লিপুর ক্যান্টিন এলাকা বা অন্যান্য স্থান থেকেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। সাধারন শিক্ষার্থীরা একধরনের শংকায় রয়েছেন যে, যেকোনো সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।