প্রকাশ: সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪, ৮:৪৬ অপরাহ্ন
মেহেরপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ইস্তাফোন (৬০) খাতুন নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, ঐ নারী দীর্ঘ ৩০ বছর পর পরিবারের কাছে ফিরে আসতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হয় তার। এদিকে বোনের মৃত্যুর খবর শুনে সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সীমান্তে ছুটে গিয়েও মৃত দেহের দেখা মেলেনি পরিবারের।
ঘটনাটি ঘটেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা নবীন নগর খাল পাড়া সীমান্তে। নিহত ইস্তাফন খাতুন একই উপজেলার শালিকা পশ্চিম পাড়ার মৃত কোমর আলীর মেয়ে। ৭ বোন আর ২ ভাই। অভাবের সংসারে ৩০ বছর আগে এক নারীর মাধ্যমে অবৈধভাবে ভারতে পাড়ি জমায় ইস্তাফোন খাতুন। ভারতের বিহারে স্বামী জয়নালের সাথে বসবাস করেন তিনি। এক সময় মারা যায় স্বামীও। স্বামী-সন্তানহীন ইস্তাফোন জীবনের শেষ সময়টুকু কাটাতে চেয়েছিলেন পরিবারে ভাই বোনদের সাথে। সেই আশায় গত দেড় বছর ধরে চেষ্টা করেও আসতে
পারেনি নিজ দেশে। বাধ্য হয়ে গত ৩০ জুন রবিবার রাতে খালপাড়া সীমান্তে গোপন পথে পাড়ি দিতে গিয়েই বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় সীমান্ত ঐ এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
নিহতের বড় ভাই হাসেম আলী জানান, ৩০ বছর আগে আমার বোন ভারতে পাড়ি জমান। সেখানে বিয়ে করে বিহারের একটি শহরে স্বামীর সাথে বসবাস করে আসছিলেন। দুই বছর আগে তারকাটা পেরিয়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন। কয়েক সপ্তাহ থেকে আবারো ফিরে যান বিহারে। পবে আমার বোনের স্বামী মারা গেলে শেষ বর্তমানে তার স্বামী-সন্তান কেউ না থাকায় জীবনের শেষ সময়টুকু আমাদের কাছে কাটাতে চেয়েছিলো। গত তিন দিন ধরে সীমান্তের ওপারে নদীয়া জেলার তেহট্র থানার নবীনগরে অবস্থান করছিলেন তিনি। রবিবার রাতে
আমাদের সাথে তার শেষ কথা হয় মুঠোফোনে। মধ্য রাতে খবর পাই তারকাটা পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ কালে নাটনা বিএসএফ ক্যাম্পে সদস্যদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়। সেই আশায় গত দেড় বছর যাবত চেষ্টা করেও আসতে পারেনি নিজ দেশে। বাধ্য হয়ে গত ৩০ জুন রবিবার রাতে খালপাড়া সিমান্তে তারকাটা পাড়ি দিতে গিয়েই বি এসএফের গুলিতে মৃত্যু হয় তার। তার লাশটি আমরা নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিএসএফ কিছুই জানায় নি। আমার বোনের মুখটি শেষ বারের মতো দেখতে পারবো না।
নিহতের ভাইয়ের ছেলে বিপ্লব জানান, আমার ফুপু তারকাটা পার হয়ে আমাদের বাড়িতে আসার জন্য চেষ্টা করছিলেন। ফোনে কয়েকবার তার সাথে কথা হয়। রাতে জানতে পারি বিএসএফ’র গুলিতে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবরে আমরা স্থানীয় বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্পে লাশ ফিরে পাওয়ার আশায় যোগাযোগ করি। ভারতীয় অভ্যন্তরের ঘটনায় বিজিবি কোন ভাবে লাশ পাওয়ার আশা দিতে পারেনি।
এদিকে সীমান্তে নিহতের ঘটনায় বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মন মহোন জানান, খালপাড়া সিমান্তে নিহতের ঘটনা ভারতের অভ্যন্তরে ঘটেছে। এ বিষয়ে বিএসএফ আমাদের কিছুই যানাইনি। নিহত নারীর জন্ম বাংলাদেশে তার ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা সীমান্তবর্তী গ্রাম শালিকাতে বসবাস করে। ধারনা করা হচ্ছে তাদের কাছে অবৈধ ভাবে আসতে গিয়ে এঘটনা ঘটে।