প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪, ৩:২১ অপরাহ্ন
মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রাম থেকে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গত শনিবার রাতে অনিবন্ধিত ও ট্যাগবিহীন স্বর্ণাসহ কয়েকটি জাতের ধান বীজ জব্দ করা হয়। ওই রাতেই অবৈধ ও মানহীন ধান বীজ বিক্রির অভিযোগে আরমান বীজ ভান্ডারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত।
এসময় এক ট্রাক বীজ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত বীজের ট্রাকটি জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার প্রামানিক এর জিম্মায় দেওয়া হয়। জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় ট্রাকটি বিএডিসি মেহেরপুর দপ্তর হেফাজতে রাখা হয়। কিন্তু কোন অনুমতি ছাড়াই প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে সোমবার (২৪ জুন) বীজের ট্রাকটি গোপনে বের করে দেয় বীজ কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার প্রামানিক।
শনিবার জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসারের বক্তব্য মতে, মানহীন ও অনিবন্ধিত বীজ কৃষকদের কাছে পৌঁছালে দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়বে। জব্দকৃত বীজের নমুনা সংগ্রহ করে গাজীপুর কেন্দ্রীয় বীজ পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। মানহীন বীজ হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
অথচ গতকাল সোমবার রাতে সেই বীজ পরীক্ষা ছাড়াই আবারো বিক্রির উদ্দেশ্যে জেলার বাইরে পাঠানোর চেষ্টা চালানো হয়েছে।
জব্দকৃত বীজের ট্রাকটি জেলার বাহিরে যাচ্ছে এমন খবরে বারাদী ক্যাম্পের পুলিশ অভিযান চালিয়ে ট্রাকটি আবারও আটক করে। ট্রাক আটকের খবর পেয়ে জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার প্রামানিক ঘটনাস্থলে আসেন।
এসময় তিনি জানান, আটককৃত বীজগুলি মানঘোষিত যেটা আমাদের মিনি ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। এই বীজ আটকে রাখার এখতিয়ার আমার নাই। এই বীজের সাথে ভারতীয় চারশ বস্তা বীজ কিভাবে যাচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এটা আমি বলতে পারবো না ।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান জানান, গত ২২ তারিখের রাতে ২০১৮ সালের বীজ আইনে আটককৃত ২ হাজার বস্তা ধান বীজ জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তার জিম্মায় দেওয়া হয়েছিল। আজ হঠাৎ খবর পেলাম সেই বীজ আবার জেলার বাহিরে চলে যাচ্ছে। জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তাকে বলা হয়েছিল ঢাকা বীজ পরীক্ষাগারে পরীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু জানতে পেলাম কোন অনুমতি ছাড়াই প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে তিনি বীজের ট্রাকটি গোপনে বের করে দিয়েছেন। এটা সদর থানার ওসি ও বারাদী ক্যাম্প পুলিশের সহায়তায় আবারও আটক করা হয়েছে। আটককৃত বীজের ট্রাকটি বারাদী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। প্রত্যয়ন অফিসার তিনি যে আদেশ অমান্য করেছেন এ বিষয়টি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্যারকে অবহিত করেছি। তিনি যে মোবাইল কোর্টের আদেশ অমান্য করেছেন এ বিষয়ে আমরা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো ।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে অনুমোদনহীন লাল স্বর্ণ জাতের ১০ কেজি করে ৭৩০ বস্তা, ব্রী ধান ৮৭, বি.আর ১০, বি.আর ১১ এর এক হাজার ৬শ বস্তা বীজসহ একটি ট্রাক জব্দ করা হয়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় লাল স্বর্ণ জাতের বীজ উৎপাদনের দায়ে বীজ আইনে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় আরমান বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধীকারী আরমান আলীকে।