কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নাটোরে ৭ উপজেলায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২২৭টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। শেষ সময়ে পশু পরিচর্যা ও গোখাদ্য খাওয়ানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
ইতিমধ্যে নাটোরের বিভিন্ন হাটে, খামারে এবং অনলাইনে পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। এ বছর জেলায় প্রায় ২৫০০ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা।
জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর নাটোর জেলায় ১৮ হাজার অধিক খামারে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২২৭ টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গত মৌসুমে কোরবানির ঈদে ছিল ৫ লাখ ২০ হাজার ২৩৮টি পশু। এ বছর জেলায় ষাঁড় ৯৪ হাজার ৬৫৮টি, বলদ ১২ হাজার ৮৫৩ টি, গাভী ১৪ হাজার ৩৩৫, মহিষ ২ হাজার ১৬৬টি, ভেড়া ৩৪ হাজার ১৫০টি, ছাগল ৩ লাখ ২০ হাজার ৩৬ টি এবং অন্যান্য ২৯টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
এর মধ্য নাটোর সদর উপজেলায় ৮৭ হাজার ৪৬০টি, বাগাতিপাড়া উপজেলায় ৩৭ হাজার ৯২২টি, নলডাঙ্গা উপজেলায় ৫৬ হাজার ১৮৪টি, লালপুর উপজেলায় ৪০ হাজার ৯৮১টি, গুরুদাসপুর উপজেলায় ৯৭ হাজার ৮৮৯টি, সিংড়া উপজেলায় ৯২ হাজার ৫৬৬টি এবং বড়াইগ্রাম উপজেলায় ৬৫ হাজার ২২৫টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে।
এবার নাটোর জেলায় প্রায় দুই লাখ ৫২ হাজার ৪২টি কোরবানির পশু চাহিদা রয়েছে। বাকী উদ্বৃত্ত প্রায় ২ লাখ ২৬ হাজার ১৮৫টি পশু ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার হাটে বিক্রি করা হবে। এসব পশু হাটে ছাড়াও অনলাইন প্লাটফর্ম হাট থেকে পশু কেনাবেচা করা হবে।
নাটোর জেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট বসে নাটোর শহরের তেবাড়িয়া, বড়াইগ্রাম উপজেলার মৌখাড়া হাট,
সিংড়া ফেরিঘাটে, বাগাতিপাড়ার পেড়াবাড়িয়া, গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় এবং গোপালপুর উপজেলার মধুবাড়ীসহ জেলার বিভিন্ন পশুর হাটে এবার কোরবানির পশু বিক্রি হবে।
তেবাড়িয়া এলাকার খামারি শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর কোরবানির জন্য ৬ টি ষাড় গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন তিনি। বর্তমানে বাজার দাম মোটামোটি ভালো আছে। যদি এ দাম থাকে তাহলে গরু প্রতি দেড় থেকে ২ লাখ টাকা বিক্রি করবেন বলে জানান।
সিংড়া উপজেলার হাতিন্দাহ এলাকার খামারী ইউসুফ মোল্লা বলেন, প্রতি বছর কোরবানিতে পশু সরবারহ করি। সেজন্য এক বছর থেকে পশু পরিচর্যা করতে হয়। তবে বর্তমানে পশু পালন করা লাভজনক নয়। সবকিছুর দাম বেড়েছে। এতে খাদ্য ও শ্রমিক দিয়ে উৎপাদন খবর উছে না। তবুও শখের বসে পালন করি। এ বছর ৮টি ষাড় গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছি। আশা করছি, ১৮-২০ লাখ টাকা বিক্রি হবে।
নাটোর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর নাটোর জেলায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২২৭টি কোরবানির পশু প্রস্তত রাখা হয়েছে। জেলায় কোরবানির চাহিদা পূরণ করে উদ্বৃত্ত ২ লাখ ২৬ হাজার ১৮৫টি পশু সারাদেশে বিক্রি করা হবে।
যার বাজার মূল্য প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা। এখন খামারগুলোতে পশুর সঠিক পরিচর্যা ও গোখাদ্য সরবারহ করছেন খামারীরা। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পশু উৎপাদনে প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে খামারীদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।