প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ৬:৫৩ অপরাহ্ন
সারি সারি ঝুড়িতে সবুজ পাতায় মোড়ানো টসটসে লাল লিচু। দেখলেই যেন জিভে জল আসে। বিভিন্ন পরিবহন নিয়ে বাজারে প্রবেশ করতেই খুচরা বিক্রেতা ও আড়তদারেরা ঘিরে ধরছেন। এরপর পাতা সরিয়ে শুরু হচ্ছে হাঁকডাক। পরে উচ্চ দাম হাঁকা ক্রেতা ভ্যান নিয়ে আড়তঘরে যাচ্ছেন। মুখে হাসি নিয়ে টাকা গুনছেন লিচুচাষি।
প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেহেরপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার লিচুর হাটে এখন ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। সারি সারি ঝুড়িতে সাজিয়ে রাখা লিচু। প্রতিটি থোকায় ৮০টি লিচু। কেউ খুচরা বিক্রি করছেন, কেউবা দিচ্ছেন জেলার বাইরে। ক্রেতা দাম জিজ্ঞেস করতেই লিচুর থোকা উঁচিয়ে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করছেন বিক্রেতা। এক সপ্তাহ ধরে হাটে লিচু বিক্রি চলছে।
বিক্রেতারা বলছেন, এখনো অনেকের বাগানে লিচুতে পূর্ণ লাল রং আসেনি। লিচুর বাজার জমে উঠতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।
সদর উপজেলার রাইপুর এলাকার লিচু চাষি আবুল কালাম বলেন, এ বছর বেশ কয়েকটি লিচু বাগান বছর চুক্তিতে কিনেছেন তিনি। আবহাওয়ার কারণে এবার ফলন অর্ধেকে নেমেছে। তবে শুরুতেই দাম ভালো পাচ্ছেন। দুই দিন আগে লিচু বিক্রি করেছেন ৩ হাজার ২’শ টাকায়। আজ বিক্রি করেছেন ৩ হাজার টাকায়।
তিনি আরও বলেন, বাজারে মালের জোগান কম, চাহিদাও আছে। তাই সামনের কয়েক দিন লিচুর দাম আরও বাড়বে। পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার খুচরা লিচু বিক্রেতা মহব্বত আলী সকালে লিচুর হাট থেকে দেড় কাউন আটি জাতের লিচু কিনেছেন। বাজারে লিচুর চাহিদা থাকলেও সরবারহ কম থাকায় বেশি দামে লিচু কিনতে হচ্ছে খুচরা বিক্রেতাদের। যে কারণে তাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
লিচু ক্রেতা বিপ্লব হোসেন বলেন, ৮০টি লিচুর দাম ২৬০ থেকে ৩’শ টাকা। যা আমাদের মত খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে এত দামে লিচু কিনে খাওয়া প্রায় অসম্ভব। তারপরও পরিবার ও বাচ্চাদের আবদার মেটাতে বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, জেলায় ৭১৫ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে আঁটি, বোম্বাই, মোজাফফর, আতা বোম্বাই ও চায়না থ্রি জাতের লিচু উৎপাদন হয়ে থাকে। এবার লিচুর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ১১০ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় লিচুর আকার ছোট হয়েছে যে কারণে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় কিছুটা ঘাটতি হতে পারে।