রাতের আকাশে ঘটতে চলেছে বিরাট এক বিস্ফোরণ। এখন থেকে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেকোনো একদিন ঘটনাটি ঘটবে। পৃথিবী থেকে তিন হাজার আলোকবর্ষ দূরে ঘটবে এ তারকা বিস্ফোরণ। এটি শৌখিন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জীবনে একবারই মহাকাশের এমন অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকার সুযোগ করে দেবে।
মহাকাশের করোনা বোরিয়ালিস নক্ষত্রমণ্ডল বা নর্দান ক্রাউনের বাইনারি তারকা ব্যবস্থা খালি চোখে দেখতে সাধারণত খুবই ম্লান। তবে প্রতি ৮০ বছর বা এ রকম সময়ের ব্যবধানে এই নক্ষত্রপুঞ্জের দুটি তারার মধ্যে স্থানচ্যুতি ঘটে। এসময় বড় সংঘর্ষে জড়ায় তারা, যা বিশেষ ধরনের পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বলছে, ওই বিস্ফোরণের ফলে যে আলোর দ্যুতি ছড়াবে, সেটি দৃশ্যমান হবে একটি নতুন তারার মতো। আর তা ধ্রুবতারার মতোই উজ্জ্বল। মনে হবে, রাতের আকাশে এ তারা হঠাৎ কয়েক দিনের জন্য হাজির হয়েছে।
এ নিয়ে অন্তত তিনবার এমন ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকবে মানবজাতি। প্রথমবার ১৮৬৬ সালে আয়ারল্যান্ডের বহুশাস্ত্রবিদ জন বার্মিংহাম এমন ঘটনা আবিষ্কার করেন। এরপর একই ঘটনা আবার দেখা যায় ১৯৪৬ সালে।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিদ সুমার স্টারফিল্ড বার্তা সংস্থা এএফপিকে স্টারফিল্ড জানান, নোভার (নবজ্যোতিষ্ক) এই ‘ফেটে পড়া’ দেখতে খুবই উৎসুক হয়ে আছেন তিনি।
এ জ্যোতির্বিদ ১৯৬০–এর দশক থেকে ‘ব্লেইজ স্টার’ নামে পরিচিত নক্ষত্রপুঞ্জ ‘টি করোনা বোরিয়ালিস’ নিয়ে কাজ করেছেন। আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে ঘটতে যাওয়া দুই তারকার ওই বিস্ফোরণ থেকে জ্যোতির্বিদেরা কী তথ্য খুঁজে বের করবেন, সে বিষয়ে অনুমাননির্ভর একটি গবেষণা নিবন্ধ তৈরির কাজ শেষ করছেন স্টারফিল্ড।
এ প্রসঙ্গে রসিকতার সুরে স্টারফিল্ড বলেন, ‘আমি আজই এটি করতে পারিতবে, মনে হয় তা হচ্ছে না।’
স্টারফিল্ড বলেন, ‘আমাদের পরিচিত ছায়াপথ মিল্কিওয়ে ও আশপাশের গ্যালাক্সিতে মাত্র ১০টির মতো ‘রিকারিং নোভা’ রয়েছে। সাধারণ নোভা বিস্ফোরিত হতে পারে প্রতি এক লাখ বছরে। তবে দুই তারার অদ্ভুত সম্পর্কের কারণে রিকারেন্ট নোভার বিস্ফোরণ কোনো একজন মানুষের জীবনে একাধিকবারও ঘটতে পারে।’
দুই তারার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, একটি হলো শীতল মৃতপ্রায় নক্ষত্র যাকে লাল দৈত্য (রেড জায়ান্ট) বলা হয়। যেটি তার হাইড্রোজেনের মাধ্যমে জ্বলে উঠেছে এবং ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে, যা প্রায় পাঁচ বিলিয়ন বছরে আমাদের নিজের সূর্যের পরিণতির মতোই অপেক্ষমাণ। অন্যটি একটি শ্বেত বামন। একটি নক্ষত্রের মৃত্যুর পরের পর্যায়ে সমস্ত বায়ুমণ্ডল উড়িয়ে দেওয়ার পরে এবং শুধুমাত্র অবিশ্বাস্যভাবে ঘনীভূত কেন্দ্রীয় অংশটি অবশিষ্ট থাকে।
স্টারফিল্ড বলেন, তাদের আকারের বৈষম্য এতটাই বিশাল যে ‘টি কোরোনা বোরিয়ালিস’ এর শ্বেত বামন তারাটির রেড জায়ান্ট প্রদক্ষিণ করতে ২২৭ দিন সময় লাগে। দুটি এত কাছাকাছি যে রেড জায়ান্ট নির্গত পদার্থ শ্বেত বামন তারার পৃষ্ঠে আছড়ে পড়ে এবং সেটি টেনে নেয়।
স্টারফিল্ড বলেন, একবার মোটামুটি পৃথিবীর সমান ভর শ্বেত বামনের ওপর তৈরি হয়ে গেলে, যা প্রায় ৮০ বছর সময় নেয়। এতে একটি কিকস্টার্ট রানওয়ে থার্মোনিউক্লিয়ার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। দ্রুত তাপ ও চাপ বৃদ্ধি পেয়ে বিস্ফোরণ ঘটে।
নোভা নিয়ে গবেষণা করেছেন জার্মান জ্যোতির্বিদ ইওয়াখিম ক্রাউটার। অবসরে যাওয়া এই জার্মান বিজ্ঞানী বলেন, টি করোনা বোরিয়ালিসের ওই বিস্ফোরণের দৃশ্যে নজর থাকবে অনেকের মতোই জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপেরও।
এই জ্যোতির্বিদ এএফপিকে বলেন, ‘বিরল ওই ঘটনা যখন ঘটবে, তখন সে দৃশ্য দেখতে টেলিস্কোপের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন আপনার নেই। শুধু ঘর থেকে বাইরে যান ও করোনা বোরিয়ালিসের দিকে তাকিয়ে থাকুন, তাতেই দেখবেন অভাবনীয় সেই দৃশ্য।’
ইতিমধ্যে কিছু সৌভাগ্যবান আকাশ পর্যবেক্ষক সোমবার এ বছরের সবচেয়ে বড় মহাজাগতিক ঘটনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় অংশজুড়ে এক বিরল পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ঘটবে।
জানা গেলো শেখ হাসিনার অবস্থান
হরিরামপুরে ইলিশ রক্ষায় কঠোর অবস্থানে প্রশাসন-পুলিশ ও মৎস্য দপ্তর
এ বছর সরকারি অর্থে কেউ হজে যাবে না
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০২৯
দক্ষিণ কোরিয়ায় ইসরায়েলি দূতাবাসে হামলা
প্রদীপ নিভিয়ে আর অন্ধকার চাই না
কটিয়াদীতে জলপাইয়ের বিচি খেয়ে শিশুর মৃত্যু
পূর্বধলায় ৩৬ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ আটক ১
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সরকার
বঙ্গভবনের সামনে সংঘর্ষে এক শিক্ষার্থীসহ ২ জন গুলিবিদ্ধ
