প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:২৪ অপরাহ্ন
পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার উপকূলের উপর দিয়েই যাবে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। বৃহস্পতিবার রাতে ১১০-১২০ কিমি বেগে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়টি।
উড়িষ্যার ধামরা বন্দর ও ভিতরকণিকার মাঝামাঝি আঘাত হানতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। যার জেরে বড় প্রভাব পড়বে উড়িষ্যার লাগোয়া রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতেও। এখনও বৃষ্টি শুরু না হলেও সকাল থেকে কলকাতার আকাশ মেঘলা রয়েছে। বিকেলের পর ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হওয়ার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হবে জানিয়েছে কলকাতার আবহাওয়া অফিস।
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে দুর্যোগের আশঙ্কায় বন্ধ করা হয়েছে বিমান পরিষেবা। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে কলকাতা বিমানবন্দর। ওই সময়ের মধ্যে বিমানবন্দরে কোনো উড়োজাহাজ ওঠানামা করবে না। নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে উড়োজাহাজগুলোকে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সম্ভাব্য দুর্যোগের আশঙ্কায় রেলের তরফে আগেই ১৬০টি ট্রেনের চলাচল বাতিল করা হয়েছে। এর সঙ্গে এদিন যুক্ত হলো ৩০টি দূরপাল্লার ট্রেন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১৪ ঘণ্টা শিয়ালদহ থেকে মোট ১৯০টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। হাওড়া স্টেশন থেকে বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্তা কৌশিক মিত্র বলেছেন, আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে। এর ফলে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে থাকবে ঝোড়ো হাওয়া। এজন্য কিছু ট্রেন আমরা বাতিল করছি এবং কিছু ট্রেনের গতিপথ পরিবর্তন করছি।
ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় কলকাতায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। দুর্যোগ মোকাবিলায় তৎপর রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন। কলকাতা পুলিশের তরফে একাধিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের তরফেও। ২৪ ঘণ্টার জন্য ‘ফ্লাড এলার্ট’ খোলা হয়েছে রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে।
কোনো রকম অঘটন এড়াতে তৎপর রয়েছে কলকাতা করপোরেশন। যেহেতু কলকাতার বুকে রয়েছে বহু গাছ এবং শতাব্দী প্রাচীন বাড়ি, সে কারণে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে পুরসভার শীর্ষ কর্তারা যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন। করপোরেশনের তরফে বলা হয়েছে, তৈরি রয়েছে তাদের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। শহরের সড়কে অতিরিক্ত নিকাশির জন্য রাখা হয়েছে কৃত্রিম পাম্পের ব্যবস্থা। নজর রাখা হয়েছে পুরোনো বাড়িগুলোর দিকে।
সমুদ্রেরর উপর দিয়ে আসার কারণে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে অতি শক্তি বৃদ্ধি করেছে ঘূর্ণিঝড় দানা। আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে দানা। উড়িষ্যার পারাদ্বীপ থেকে রয়েছে ২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং ধামারা থেকে ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি।