জার্মানিতে ২০ হাজার হাতি পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট মোকগোয়েতসি মাসিসি। হাতি শিকারের (হান্টিং ট্রফি) ওপর জার্মান বিধিনিষেধের কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক বিরোধের জেরে এমন হুমকি দিয়েছেন বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট।
হান্টিং ট্রফি হলো কোনো বন্য প্রাণীকে গুলি করে হত্যার পর এর মাথা-চামড়া ট্রফি বানিয়ে সাজিয়ে রাখা। বার্লিন এবার এই হান্টিং ট্রফি আমদানিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কথা প্রস্তাব করেছে। এতেই বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট মাসিসি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
তিনি গত বুধবার বলেছেন, জার্মানদের হাতির সঙ্গে বসবাসের অভিজ্ঞতা নেওয়া উচিত। বতসোয়ানায় হাতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধিকে তিনি ‘প্লেগ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হান্টিং ট্রফিতে জার্মানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ। দেশটি চলতি বছরের শুরুর দিকে এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আমদানির ওপর কঠোর নীতি আরোপের কথা প্রস্তাব করে।
বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট মোকগোয়েতসি মাসিসি জার্মান দৈনিক বিল্ডকে বলেছেন, বতসোয়ানায় হাতির সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বেড়ে গেছে। কেবল শিকারের মাধ্যমেই হাতির সংখ্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।
জার্মানির পরিবেশমন্ত্রী স্টেফি লেমকের নেতৃত্বাধীন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে বতসোয়ানা। কারণ, ইতিমধ্যেই দেশটিতে হাতির সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার হয়েছে। এই অতিরিক্ত হাতির সংখ্যা মোকাবিলায় বতসোয়ানা অ্যাঙ্গোলায় ৮ হাজার ও মোজাম্বিকে আরও ৫০০ হাতি পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মাসিসি বলেন, ‘বার্লিনে বসে বতসোয়ানার বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা খুবই সহজ। কিন্তু আমরা এই প্রাণী সংরক্ষণে বিশ্ব, এমনকি স্টেফি লেমকের দলের কারণে চরম মূল্য দিচ্ছি। এটা মশকরার বিষয় নয়। আমাদের যেভাবে প্রাণীর সঙ্গে বসবাস করতে বলেছে, ঠিক সেভাবে জার্মানদেরও প্রাণীদের সঙ্গে বসবাস করা উচিত।’
হাতির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে জার্মানিতে ২০ হাজার হাতি পাঠানোর কথা উল্লেখ করেন মাসিসি বলেন, ‘আমরা জার্মানিকেও এমন উপহার দিতে চাই। উপহার গ্রহণের ক্ষেত্রে আমরা জার্মানদের কাছ থেকে না শুনতে চাই না।’
প্রেসিডেন্ট বলেন, হাতির পাল সম্পত্তির ক্ষতি করছে, ফসল খাচ্ছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের পদদলিত করছে। হান্টিং ট্রফি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা এই সমস্যা আরও প্রকট করবে বতসোয়ানার মানুষকে আরও দরিদ্র করে তুলবে।
২০১৪ সালে বতসোয়ানা হান্টিং ট্রফি নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু স্থানীয় সম্প্রদায়ের চাপে ২০১৯ সালে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় দেশটি। বর্তমানে দেশটিতে নির্দিষ্ট কোটায় শিকারের অনুমতি দেওয়া আছে।
বার্লিনের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, এ বিষয়ে বতসোয়ানা জার্মানির কাছে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। তবে বতসোয়ানাসহ আমদানি বিধিতে ক্ষতিগ্রস্ত আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে মন্ত্রণালয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।