সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট দেওয়ায় কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বাকামিন খানের নেতৃত্বে বেদে পল্লীতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। গ্রেফতার হয়নি অপরাধীরা। ঘটনার পর থেকে আতঙ্ক রয়েছে বেদে পল্লীর শতাধিক পরিবার।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে বেদে পল্লীর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবাররা।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তরা দাবী করেন,মাদারীপুর-৩ আসনে নৌকায় ভোট দেওয়ায় টানা দুই দিনে বেদে পল্লির ১৭টি বাড়ি ঘরে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
এসময় ঘরবাড়ি ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্জনা বেগম বাদী হয়ে ১০ জানুয়ারি ৪২ জনের বিরুদ্ধে কালকিনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তবে বাদীর অভিযোগ কালকিনি থানি পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি। গ্রেফতার করছেনা অপরাধীদের। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আহাজারি চলছে বেদ পল্লীর বেশ কয়েকটি ঘরে। ঘরবাড়ি তছনছ, লুটপাট করা হয়েছে ম‚ল্যবান জিনিসপত্র। এদিকে ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ ১৭টি পরিবারকে ১ লক্ষ ৭০হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মাদারীপুরের কালকিনির চর ঠেঙ্গামারা গ্রামে কয়েকশ অস্ত্রধারী হামলা চালায় বেদে স¤প্রদায়ের মানুষের ওপর। বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ১৭টি বসতঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে হতদরিদ্ররা।
বেদে পল্লীর সরদার মনির হোসেন জানান, একসঙ্গে কয়েকশ মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। ঘর থেকে সবকিছু নিয়ে গেছে। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, দামি আসবাবপত্র, খাবারের চাল-ডালও বাদ পড়েনি। পা ধরে তাদের নিষেধ করলেও কেউ শোনেনি এই কথা। হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ সভাপতি বাকামিন খান ও তার ভাই রাশেদ খান। আমরা এর বিচার চাই।
তবে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বাকামিন খান।
তিনি বলেন, আমি আসার আগেই দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। আমি থামানোর চেষ্টা করেছি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়।
কালকিনি থানার ওসি (তদন্ত) মারগুব তৌহিদ জানান, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।