শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে ‘লিভার’ বা যকৃত অন্যতম। শরীরে প্রবেশ করা সবকিছুর বিপাক ও শরীরের বর্জ্য অপসারণের কাজটি করে যকৃত।
তবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গের কোনো ক্ষতি হলে প্রাথমিক অবস্থায় তার লক্ষণ দেখা যায় খুবই সামান্য।
তাই এই লক্ষণগুলো চোখে পড়লে যকৃত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
হলুদাভ চোখ কিংবা ত্বক:
জন হপকিন্স মেডিসিন’য়ের বরাত দিয়ে ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়- ত্বক ও চোখ হলুদ হওয়ার কথা শুনলে জন্ডিসের কথাই মনে পড়ে। আর এই রোগ যকৃতের সঙ্গেই জড়িত।
যকৃত যখন সঠিকভাবে রক্ত থেকে ‘বিলিরুবিন’ নামক উপাদানটি ছেঁকে অপসারণ করতে পারে না তখনই এই রোগ দেখা দেয়।
রক্তের লোহিত কণিকা জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার এই ‘বিলিরুবিন’ যা শরীরের অতিরিক্ত হয়ে গেলে চোখ ও ত্বকে হলুদ আভা দেখা দেয়।
যকৃতের রোগের প্রথম এবং অনেকসময় একমাত্র লক্ষণ হয় এই জন্ডিস।
শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোলাভাব:
পা, গোড়ালি বা পেটের জায়গায় যদি লম্বা সময় ধরে ফুলে থাকে তবে সেটাও হতে পারে যকৃত নষ্ট হওয়ার পূর্বাভাস।
যকৃতের সবচাইতে মারাত্মক রোগ হলো ‘সিরোসিস’। আর এই রোগে আক্রান্ত প্রায় অর্ধেক রোগীর মাঝেই দেখা যায় শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়ার ঘটনা।
যকৃত যখন ‘অ্যালবিউমিন’ তৈরি করতে ব্যর্থ হয় তখনই ‘সিরোসিস’ হয়।
চুলকানি:
যকৃতের কার্যক্ষমতা কমে গেলে শরীরের প্রায় সকল জায়গায় চুলকানি দেখা দেয়। কর্মক্ষমতা কমার কারণে ত্বকের নিচে ‘বাইল সল্ট’ জমতে থাকে, শরীরে ‘হিস্টামিন’য়ের মাত্রা বেড়ে যায়, কমে যায় ‘সেরোটনিন’ হরমোনের মাত্রা। এসব মিলিয়ে চুলকানি দেখা দেয় প্রচণ্ড মাত্রায়।
র্যাশ:
চুলকানির পাশাপাশি ত্বকে র্যাশও দেখা দিতে পারে যকৃত দুর্বল হওয়ার কারণে। এই র্যাশ হয় লালচে বেগুনি রংয়ের। সঙ্গে থাকতে পারে ছোট কিংবা বড় ফুসকুড়িও। শাখা রক্তনালী থেকে হওয়া রক্তক্ষরণ এর প্রধান কারণ।
কালশিরা পড়া:
একই রক্তক্ষরণের কারণে সামান্য আঘাতেই ত্বকে দাগ বসে যায়। ত্বকের নিচে রক্ত জমাট বাঁধে। আর সেটাও যকৃত নষ্ট হওয়ার লক্ষণ।
চর্বি জমা:
যকৃত নষ্ট হওয়া কারণে ত্বক ও চোখের পাতায় হলুদাভ ফোলাভাবের সৃষ্টি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত যকৃতের কারণে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে, এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ত্বকে ও চোখের পাতায় চর্বি জমার কারণে।
-জ/অ