প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২, ৮:৩১ অপরাহ্ন
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা থেকে এসেছেন দীলিপ সিংহ। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। দেখা করেন ভারতে বসবাস করা বোন ও ভগ্নিপতির সঙ্গে। প্রায় এক যুগ পর ভাই-বোনের দেখা হলে তারা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। ভূ-খণ্ডের কাঁটাতারের সিমান্ত যে রক্তের বাঁধন'কে আলাদা করে রেখেছিলো; আজ বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সেটা দূর হলো সীমান্ত মেলার সৌজন্যে।
দুই দেশের সীমান্তে মিলনমেলা নাম হলেও স্থানীয়দের কাছে ‘কান্নাকাটির মেলা’ নামেই পরিচিত। মেলায় অংশ নেওয়া মানুষদের দেখলে নামটির তাৎপর্য বুঝতেও যেন বাকি থাকে না।
লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের ঘোঙ্গাগাছ সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে মালদহ নদীর তীরে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও ভারতীয়রা জানান, উভয় দেশের নাগরিক মালদহ নদীতে পূণ্যস্নান করেন। বিশেষ করে ভারতীয় নাগরিকরা কাঁটাতারের বেড়ার পাশে ভেড়ভেড়ি এলাকায় গঙ্গাপূজা করার পর মালদহ নদীতে পূণ্যস্নান করে থাকেন।
পাকিস্তান আমল থেকে মেলাটি অনুষ্ঠিত হলেও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত ২ বছর মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়নি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার সিতাই থানায় কাটাতারের বেড়ার পাশে ভেড়ভেড়ি এলাকায় মালদহ নদীর তীরে গঙ্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিবছর চৈত্র মাসে এই মেলার আয়োজন করা হয়।
গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, লালমনিরহাটসহ পাশের জেলা রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক হাজার বাংলাদেশি এসেছিলেন কান্নাকাটির মেলায়। অধিকাংশ মানুষ এসেছিলেন ভারতে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য। কঠোর নজরদারিতে মেলাটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। সন্ধ্যা ৫টা পযর্ন্ত সীমান্তে মালদহ নদীর তীরে ভীড় ছিলো মানুষজনের। মেলা শেষে দু’দেশের নাগরিকরা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যান।