শীতের আমেজ চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের শীতকালীন প্রাকৃতিক দৃশ্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা। ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকা নদী-নালা ও হাওরের জনপদে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন যেন শীতের বার্তাবাহক।
বালিহাঁস, পানকৌড়ি, বক, শামুকখোল, হরিয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলতানে খাল-বিল, হাওর-বাওর এবং জলাশয় হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। হাজার মাইল দূর থেকে আসা এই অতিথি পাখিদের উপস্থিতি প্রকৃতিকে নতুন রূপ দেয়।
গোধূলির মায়াবী আলোয়, পাখিদের নীড়ে ফেরার দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। ঝাঁকে ঝাঁকে আকাশে ওড়াউড়ি আর তাদের মধুর গুঞ্জন যেন দিনশেষের এক সুরেলা গল্প বলে। এই নিসর্গময় পরিবেশ অবকাশ যাপনে থাকা মানুষদের হৃদয় জুড়িয়ে দেয়, শান্তি এনে দেয়। প্রকৃতির এই সুরেলা ও শান্ত পরিবেশ জীবনের এক নতুন উপলব্ধি এনে দেয়।
রাতের আঁধারে আহার করতে আসা অতিথি পাখিগুলোকে বিভিন্ন রকম ফাঁদ পেতে এলাকার শিকারিরা শিকার করে। শিকার করা পাখি একতারপুর চক বাজারে বিক্রি করতে দেখা যায়।
পাখিগুলোর মধ্যে রয়েছে- (স্থানীয় নাম) অগা, চেগা, নাড়ি হাঁস, শামুক খাওরি, ধল বক, ইত্যাদ। এ সকল পাখি ৬০০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হয়।
স্থানীয়দের আমানুর রশিদ ভূঁইয়া, একতারপুর হাই স্কুল প্রধান শিক্ষক শাহ আলম মিয়ার, শিক্ষানবিশ এডভোকেট জহুরুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, কিছু অসাধু ব্যক্তি অতি মুনাফার আশায় আইনকে উপেক্ষা করে এসব কাজ করে চলেছে। তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা একান্ত প্রয়োজন। তা না হলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এর সকল অতিথি পাখি পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাবে।
অতিথি পাখি শিকার দণ্ডনীয় ফৌজদারি অপরাধ। ১৯৭৪ সালে বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে দণ্ডের বিধান রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত। একই অপরাধ ফের করলে শাস্তি ও জরিমানা দ্বিগুণের বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানা ওসি (তদন্ত) অমিতাভ দাশ তালুকদার বলেন- খোঁজ নিয়ে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারোয়ার রহমান বলেন, অতিথি পাখি শিকার বেআইনী, খোঁজ নিয়ে এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।