দক্ষিণ লেবাননে দ্বিতীয় ধাপের স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তেল আবিবের দৈনিক মারিভের বরাতে আনাদোলু এজেন্সি মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছে। গোষ্ঠীটির নতুন আস্তানার দিকে অগ্রসর হচ্ছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। এর অর্থ হচ্ছে, দক্ষিণ লেবাননের নতুন এলাকা ইসরায়েলি আগ্রাসনের কবলে পড়তে যাচ্ছে।
তথ্য মতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননে স্থল যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়ের যে সূচনা করেছে তাতে যোগ দিয়েছে ৩৬ তম ডিভিশন। হিজবুল্লাহর দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা লাইনের দিকে অগ্রসর হয়েছে তারা। ৩৬ তম ডিভিশন একটি সাঁজোয়া ডিভিশন এবং এটি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মধ্যে বৃহত্তম।
ডিভিশনের সংযুক্ত আছে গোলানি ব্রিগেড, প্যারাট্রুপারস ব্রিগেড এবং ১৮৮ তম সাঁজোয়া ব্রিগেডসহ যুদ্ধ প্রকৌশলীরা। তারা ইতোমধ্যে দক্ষিণ লেবাননে নতুন অপারেশনে জড়িত। ইসরায়েলি দৈনিকটি বলেছে, এই অভিযানের উদ্দেশ্য হলো ওই অঞ্চলে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি ভেঙে দেওয়া এবং লেবাননে রাজনৈতিক মীমাংসার আলোচনায় বসতে হিজবুল্লাহর ওপর চাপ প্রয়োগ করা।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করে। এর প্রতিবাদে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে রকেট ছুড়ে আসছিল হিজবুল্লাহ। মাঝে মধ্যে ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে গুলিও ছুড়েছে তারা। সীমান্ত সংঘাত যখন চরমে তখন ইসরায়েল হিজবুল্লাহ নিধনে লেবাননে বোমা হামলা শুরু করে। লেবাননের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ইসরায়েলি হামলায় প্রায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৩০০ জন নিহত এবং সাড়ে ১৪ হাজার আহত হয়েছেন। তবে দক্ষিণ লেবাননে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হওয়ায় প্রকৃত সংখ্যা জানা দুষ্কর।
এদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে স্বাধীনতাকামীরা। সোমবারের (১১ নভেম্বর) লড়াইয়ে তারা উল্লেখযোগ্য সফলতা পেয়েছে। ওই দিন সম্মুখযুদ্ধে ইসরায়েলের আরও ৪ সেনা নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে নিহতের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে এখনও সংঘাতের ঘটনা বিস্তারিত জানায়নি। খবর দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের।
আইডিএফ জানায়, উত্তর গাজা উপত্যকায় লড়াইয়ের সময় চার সেনা নিহত হয়েছেন। তারা হলেন, স্টাফ সার্জেন্ট ওর কার্টজ (২০), স্টাফ সার্জেন্ট নেভ ইয়ার আসুলিন (২১), স্টাফ সার্জেন্ট গ্যারি লালরুয়াকিমা জোলাট (২১) ও স্টাফ সার্জেন্ট ওফির ইলিয়াহু (২০)।
সৈন্যরা সবাই কেফির ব্রিগেডের শিমশন ব্যাটালিয়নের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। তাদের মৃত্যুতে গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে স্থল আক্রমণ এবং সীমান্তে অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনা নিহতের সংখ্যা ৩৭৫ জনে দাঁড়াল। তবে আইডিএফের এ হিসাব অনেকেই মানতে নারাজ। বিভিন্ন সংগঠন ইসরায়েলি সেনা নিহতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশিত সংখ্যার কয়েক গুণ বলে দাবি করেছে।