
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিরল খনিজ সম্পদের প্রবেশাধিকার দিতে প্রস্তুত, যার মধ্যে রাশিয়া-অধিকৃত ইউক্রেনের খনিজও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
গতকাল সোমবার রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পে সম্পদ বিনিয়োগে আগ্রহী, বিশেষ করে রাশিয়ার ‘নতুন অঞ্চলগুলোতে’ খনিজ আহরণের বিষয়ে।
‘নতুন অঞ্চল’ বলতে পুতিন মূলত ইউক্রেনের সেই পূর্বাঞ্চলীয় অংশগুলোর কথা বোঝান, যেগুলো রাশিয়া তিন বছর আগে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর দখল করে নিয়েছিল।
এই প্রস্তাবের আওতায় দুই দেশ একসঙ্গে অ্যালুমিনিয়াম আহরণ ও সরবরাহের বিষয়েও সহযোগিতা করতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রে দামের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন পুতিন। এসময় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের রাশিয়ার দখল করা নতুন অঞ্চলগুলোতে সম্পদ আহরণের সুযোগ দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
পুতিনের এই ঘোষণা এমন এক সময় এলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার ইউক্রেনের অর্ধেক খনিজ সম্পদের বিনিময়ে দেশটিকে সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। ইউক্রেনের একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, এই বিষয়ে একটি চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ক্রমাগত বাড়ছে বলে জানা গেছে। ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের প্রবেশাধিকার চেয়ে একটি চুক্তির জন্য চাপ দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
কিয়েভের হিসাবে, বিশ্বের প্রায় পাঁচ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ইউক্রেনে রয়েছে। তবে রাশিয়া ২০২২ সালে হামলা শুরুর পর কিছু খনিজ ভাণ্ডার দখল করে নিয়েছে।
ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তার পরিমাণ প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার এবং তিনি চান, এর মূল্য পরিশোধ করতে ইউক্রেন তার খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রবেশাধিকার দিক।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হিসাবকে বিতর্কিত বলে মনে করেন এবং সম্ভাব্য চুক্তিতে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে চান।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার পাওয়ার জন্য একটি চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। ইইউর শিল্প কৌশল বিষয়ক কমিশনার স্তেফান সেজুরনে এই চুক্তিকে ‘উভয়ের জন্য লাভজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন।