ফরিদপুরর সালথার আলোচিত কাসেম বেপারী নামের এক যুবক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন উপজেলাটির সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর (৪৮)।
আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) শৈলেন চাকমা (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২ টার দিকে জেলার ভাঙ্গা রাস্তার মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বরকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি সালথার কাসেম বেপারী হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি।
উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর ফরিদপুরের সালথার গট্টি ইউনিয়নের জয়ঝাপ ইমামবাড়ি মেলার মধ্যে সঙ্গে থাকা এক তরুণীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কাশেম ব্যাপারী (২৮) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে কয়েকজন বখাটে তরুণ। এসময় চাইনিজ কুঁড়ালের আঘাতে মিলন (৩২) নামে অপর এক যুবক আহত হন।
নিহত কাশেম উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মধ্যবালিয়া গ্রামের গেদা বেপারীর ছেলে। আহত মিলনও একই গ্রামের মহিন উদ্দিনের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ১৪ অক্টোবর বিকেলে কাশেম ব্যাপারী ও মিলন জয়ঝাপের ইমাম বাড়ি মেলা ও নৌকা বাইচ দেখতে যান। তাদের সঙ্গে দুই তরুণীও ছিল। মেলার ভেতরে কেনাকাটার সময় কাসেম ও মিলনের সঙ্গে এক তরুণীকে উত্যক্ত করতে থাকেন স্থানীয় জয়ঝাপ গ্রামের মুসা মোল্যার ছেলে বাহাদুর মোল্যা নামে তরুণ।
তারা আরও জানান, এ সময় কাসেম ও মিলন প্রতিবাদ করলে বাহাদুর ক্ষিপ্ত তার দুই ভাইকে ডেকে আনে। পরে বাহাদুর (২৩) ও তার ভাই তৈয়াব (২০) এবং সোহেলসহ (১৮) কয়েকজন তরুণ চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কাসেম ও মিলনকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা আহত দুই জনকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা কাশেমকে মৃত ঘোষণা করেন।
অতঃপর, এ ঘটনায় সালথা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে।সে মামলার এক নম্বর আসামি মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর।
তবে, এ হত্যা মামলাকে পুঁজি করে উপজেলাটির খায়রুল বাশার আজাদ নামের এক বিএনপি নেতার ছত্রছায়ায় তার ভায়রা জাহিদ মাতুব্বর সহ বেশ কিছু আ'লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এলাকায় কাসেম বেপারী হত্যা মামলায় আসামি করা ও লুটপাটের ভয় দেখিয়ে কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠে। সে মামলায় চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা এখনও জেল হাজতে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর শারদীয় দুর্গাপূজার পরদিন জয়ঝাপ গ্রামের ইমাম বাড়ি এলাকায় মেলা বসে ও নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। শতবছর ধরে সেখানে মেলার আয়োজন করা হয়। সে মেলায়ই এ হত্যাকান্ড ঘটে।