প্রকাশ: বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৪, ২:১৮ অপরাহ্ন
শীতের আগমনী বার্তা প্রকৃতিতে। সকালের শিশিরভেজা ঘাস আর হালকা কুয়াশায় প্রস্তুত হচ্ছে প্রকৃতি। সেই সঙ্গে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত হতে দেখা যাচ্ছে গাছিদের। শীত এলেই গ্রামীণ জনপদে প্রাত্যহিক উৎসব শুরু হয় এই খেজুরগাছকে কেন্দ্র করে।
কিন্তু অবহেলায় পড়ে থাকা খেজুরগাছের কদর বাড়ে এই শীত মৌসুমেই। গাছিরা খেজুরগাছ থেকে রস আহরণের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করেন। শুরু করেন প্রাথমিক পরিচর্যার। এই কাজকে স্থানীয়ভাবে ‘গাছ তোলা’ বলা হয়।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার দেওয়ানজীকান্দি গ্রামের গাছি মো. মামুন প্রধান ওরফে গোলাম হোসেন। খেজুরগাছ থেকে রস আহরণ ও বিক্রি তাঁর মৌসুমি পেশা। কয়েক দিন পর থেকেই গাছে গাছে রস আসা শুরু হবে। তাই গাছ প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন সকালে মোটরসাইকেলে করে দা ও কোমরে দড়ি বেঁধে বেরিয়ে যান ঘর থেকে। খেজুরগাছে উঠে নিপুণ হাতে গাছ প্রস্তুত করে চলেছেন তিনি। এখন যেন দম ফেলার সময় নেই।
গোলাম হোসেন জানান, ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি শীতকালে খেজুরগাছ কেটে রস সংগ্রহ করেন। তিনি তার বাড়িতে ৩১ টি খেজুর গাছ লাগিয়েছেন রস সংগ্রহের জন্য। এবার প্রায় ৬৫ থেকে ৬০টি গাছ একাই তিনি প্রস্তুত করবেন রস আহরণের জন্য। এক সময় একাই দেড়শ থেকে দুইশ গাছে রস সংগ্রহ করতাম।আগে আমার বাবা আব্দুল কাদির প্রধান এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন কিন্তু এখন বয়সের কারণে আর পারছেনা। এর আগে গাছ ছিল অনেক বেশি। এখন দিন দিন খেজুরগাছ কমে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে গাছের রস উৎপাদন ক্ষমতা।
অনুরূপভাবে উপজেলার ছেংগারচর, ষাটনল, হানিরপাড়, এখলাসপুর, ফরাজীকান্দি, টরকী, ইসলামাবাদ, বাগানবাড়ি, গজরা, সাদুল্ল্যাপুর সহ প্রায় পুরো উপজেলায় এখন গাছিরা ব্যস্ত খেজুরগাছ তৈরিতে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী জানান, খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করা থেকে গুড় তৈরি পর্যন্ত একটি শিল্প, যা আজ বিলুপ্তির পথে। উপজেলায় এখনো বেশকিছু খেজুরগাছ রয়েছে। ইতিমধ্যে গাছিরা গাছ প্রস্তুত করা শুরু করেছেন। খেজুরের গাছ ও গাছির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।