প্রকাশ: রোববার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭:৫১ অপরাহ্ন
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে সংস্কৃতিক প্রাচুর্য ও সমৃদ্ধ ইতিহাসের পরিণতি মেলবন্ধনের মায়ায় কিংবদন্তিতে রূপ নেয় ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো। তেমনি ইতিহাস আর ঐতিহ্য ভরা চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের মোগল আমলের সামন্ত সভ্যতার অনুপম নিদর্শন ইসলামগাঁথী এক গম্বুজ মসজিদ।
৪০০ বছর আগের এই ঐতিহাসিক নিদর্শনটি আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মতলব উত্তর উপজেলার এই সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের আশ্রয়স্থলটি প্রাচীন বিস্ময়ে পরিপূর্ণ ইতিহাস-ঐতিহ্যের সংস্কৃতিক প্রাচুর্য ও সমৃদ্ধ সবাইকে আকর্ষণ করে তোলে।
মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ছোট হলদিয়া গ্রামে অবস্থিত এক গম্বুজ মসজিদ। এই মসজিদটি জৈনিক রূপ সরকার প্রায় ৪০০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত করেন।
স্থানীয় জনগণের ভাষ্যমতে যখন মসজিদটি রুপ সরকার প্রতিষ্ঠিত করেন তখন মতলব উত্তর ছিল চরাঞ্চল তেমন ছিল না কোন বসতি। পুরো ছোট হলদিয়া গ্রামে পাঁচ বা সাতটি পরিবার বসবাস করতো। সে সময়ে নামাজ আদায়ের জন্য রুপ সরকার প্রতিষ্ঠিত করেন মসজিদটি।
প্রায় ৪০০ বছর আগের প্রাচীন এই স্থাপনাটি এখন বিলুপ্তির পথে। সব মিলিয়ে ছোট হলদিয়া গ্রামে বর্তমানে ১২টি মসজিদ থাকার কারণে এখন আর কেউ নামাজ আদায় করে না প্রাচীন এই মসজিদে। মসজিদে এখনো আসেনি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোন প্রকার অনুদান। দুঃখের বিষয় হলো ভাঙনের মুখে বিলীন হতে বসেছে মতলবের এই প্রাচীন ইতিহাস।
মসজিদের পূর্ব পাশ রয়েছে বড় একটি পুকুর। যেকোন সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা।
মতলব, চাঁদপুর বা বৃহত্তর কুমিল্লা সৃষ্টি হওয়ার আগে কালের সাক্ষী ৪০০ বছরের পুরনো এই এক গম্বুজ মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংরক্ষণের জন্য কেউ থাকলে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ রইলো।
মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা মো. সানাউল্লাহ সরকার বলেন, আমার দাদা, বাবা এবং পূর্ব পুরুষরা এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণ করেছেন। আমরাও করছি। তবে সাধ্য কম থাকায় ঠিকমত রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছি না। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি সহায়তা পাই তাহলে এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণে সুবিধা হতো।
ফরাজীকান্দি ইউপি সদস্য মো. আব্দুল হালিম সরকার, এই মসজিদটি আমাদের পূর্ব পুরুষদের দেওয়া। ১৭ শতাংশ জায়গা আছে মসজিদের নামে। এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রশাসনের সহায়তা চাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) একি মিত্র চাকমা বলেন, আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে খোঁজ খবর নিব। যদি এরূপ কোন ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হয় তাহলে আমরা সাধ্য মত দেখব এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে যদি অবগত করা লাগে সেটাও করব।