জামালপুরের বকশীগঞ্জ হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা। অবহেলায় রজব আলী (৪৫) নামে এক রিকশা চালকের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে এক চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে।
এঘটনার প্রতিবাদে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন ভর্তিরত ও বহিরাগত রোগীরা। এতে রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে অন্যত্র ফিরে যাচ্ছেন।
জানা যায়, সোমবার বিকাল ৫ টার দিকে বুকে ব্যাথা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন রিকশা চালক পৌর এলাকার চরকাউরিয়া সীমারপাড় গ্রামের বাসু মিয়ার ছেলে রজব আলী।
এর কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হলে রজব আলীর স্বজন ও স্থানীয় এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে উঠে।
এসময় রজব আলীর স্বজন ও তাদের লোকজন হাসপাতালে আরএমও ডা.আসমা লাবনীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং তাকে মারধর করেন।
মৃত রজব আলীর ছেলে নুর আলম জানান, আমার বাবার অবস্থা খারাপের দিকে গেলে কর্তব্যরত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসমা লাবনীকে ডাকা হলে তিনি আসেন নি। এক পর্যায়ে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এব্যাপারে আরএমও ডা. আসমা লাবনী জানান, রোগীর অবস্থা আগে থেকে খারাপ থাকায় তাকে রেফার্ড করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু রোগীর স্বজনরা আর্থিক সংকটের কথা বলে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখানে রোগীর চিকিৎসায় কোন অবহেলা হয় নি।
এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসককে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে অর্নিদিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেন কর্মরত সকল চিকিৎসক ও সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং কর্মচারীবৃন্দ। হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা দ্রত হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।
হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীরা জানান, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অত্যন্ত দু:খজনক। চিকিৎসক কর্মচারীরা কর্মস্থলে নিরাপত্তা না পেলে তারা কিভাবে কাজ করবেন। তাই দ্রত জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, একজন নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় আমরা বসে থাকতে পারি না। আমাদের দাবি মানা না হলে কর্মবিরতি চলতেই থাকবে। আমরা এঘটনায় মামলা দায়ের করব।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, গতকাল (সোমবার) হাসপাতালের চিকিৎসকের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।