প্রকাশ: শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪, ৭:২৩ অপরাহ্ন
দেশে আনারসের সিংহভাগ মধুপুর ও ঘাটাইলের পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপাদিত হলেও সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় নষ্ট হচ্ছে আনারস। ক্রেতা স্বল্পতার কারণে ভরা মৌসুমেও আনারস কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয় আনারস চাষিরা।
চাষিরা জানান, এবার সারের দাম বৃদ্ধিসহ কিছু কারণে আনারস চাষের খরচ অনেক বেড়েছে। কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে গত বছরের চেয়ে অনেক কম দামে। বাগান থেকে তুলে বাজারে নেওয়ার পর সেগুলো আর ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয় না। এই অঞ্চলে জলডুঙ্গি বা জায়ান্টকিউ জাতের আনারস চাষ হয় বেশি। রসালো এই ফল তুলনামূলকভাবে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে। আনারসের রাজধানী হিসেবে খ্যাতি কুড়িয়েছে মধুপুরের জলছত্র হাট ও ঘাটাইলের গারো হাট।
গারোবাজার আনারসের হাট ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতারা ভ্যান ও সাইকেলে ঝুড়িতে পসরা সাজিয়ে সারি সারি করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। পাইকার না থাকায় অনেক চাষি দিনের পর দিন গাঁদি করে ফেলে রেখেছেন ফল। স্থানীয় ক্রেতারা প্রতি শতক আনারস কিনছেন সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকায়। খুচরা বাজারে প্রতিটি আনারস বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। এবার ফলন ভালো হওয়ায় আনারস আকারে বেশ বড় হয়েছে। তবে দাম না থাকায় খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চাষিদের। কবে নাগাদ আনারসের ন্যায্য মূল্য পাবেন তাও জানতে পারছেন না চাষিরা। এমন হলে হয়তো আনারসের আবাদ ছেড়ে দিতে হবে বলেও কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন।
কৃষকরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে আনারসের চাহিদা ছিল। দামও ভালো ছিল। তবে অতি বৃষ্টি ও স্থবির পরিস্থিতির কারণে আনারসের চাহিদা কমে গেছে। এজন্য ক্রেতাশূন্য হয়ে গিয়েছে আনারসের বাজার। এতে আনারস চাষিদের মাথায় হাত দেওয়ার অবস্থা দাঁড়িয়েছে। আনারসে এমন লোকসানে থাকায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
গারোবাজারের সিংহচালা এলাকার আনারস চাষি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রায় ৫ একর জমিতে আনারস আবাদ করেছি। এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সে তুলনায় খরচ উঠবে কিভাবে তা নিয়ে চিন্তিত। ভালো দাম হলে এ সিজনে প্রায় দুই লাখ টাকা বিক্রি হতো। এখনতো খরচও ওঠবে না।
অপর এক ব্যাবসায়ী মিন্টু মিয়া জানান, বৃষ্টির কারণে আনারসের চাহিদা নেই বললেই চলে। তিনি শতকরা আনারস কিনছেন ২ থেকে ৩ হাজার টাকায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর এ উপজেলায় প্রায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে আনারস আবাদ হয়েছে, যা অন্যান্য বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর বেশি।
ঘাটাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে আনারসের ফলন ভালো হচ্ছে। আনারস সংরক্ষণের বিভিন্ন উপায় নিয়ে ভাবছে কৃষি বিভাগ।