টঙ্গীতে চার দিন শান্ত থাকার পর আবারো ১৪ দফা দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয়েছে। এতে টঙ্গী-জয়দেবপুর শাখা সড়ক কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে।
আজ রবিবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টঙ্গী এলাকার বিভিন্ন স্থানে চারটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা এসব বিক্ষোভ করেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টঙ্গীর স্কুইব রোড সংলগ্ন এলাকায় ন্যাশনাল পলিমার ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড, এমট্রানেট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড ও ব্রাভো এপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা দাবি আদায় অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করে।
আর টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় বিক্ষোভ করছে প্রিন্স জ্যাকার্ড লিমিটেডের শ্রমিকেরা।
জানা যায়, আজ রবিবার সকাল ৮টা থেকে টঙ্গীর স্কুইব রোড সংলগ্ন কারখানার সামনে ১৪ দফা দাবিতে ন্যাশনাল পলিমার ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে বিক্ষোভ করে। শ্রমিকদের ১৪ দফা দাবিগুলো হলো, নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন না করা, প্রতি বছর বেতনের ১০ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট দেওয়া, শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেওয়া, বাৎসরিক ছুটির টাকা দেওয়া, ক্যাজুয়াল শ্রমিকদের বেতন অন্যান্য প্লাস্টিক কারখানার সঙ্গে তুলনা করে সমন্বয় করা, শ্রমিক সংগঠন তৈরি করা ও শ্রমিকের চাকরিচ্যুত বা পৃথকীকরনের ক্ষেত্রে শ্রম আইনের ধারা অনুসরণ করাসহ ১৪ দফা দাবি।
আন্দোলন চলাকালে শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে শিল্প পুলিশ।
এরপর বিকাল ৪টায় শ্রমিকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে।
এদিকে আজ বিকেলে টঙ্গী বিসিকের মেঘনা রোডের এমট্রানেট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড ও ব্রাভো এপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা ১৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের দাবিগুলো হলো- প্রতি মাসের ৩-৭ তারিখের মধ্যে সব শ্রমিক-কর্মচারিদের বেতন দেওয়া, সব শ্রমিক ও স্টাফদের বেতন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধিসহ ১০০০ টাকা হাজিরা বোনাস, সব শ্রমিক স্টাফদের বাৎসরিক ১৮ দিনের ছুটির টাকা, সার্ভিস বিল, টিফিন বিল ৫০ টাকা, নাইট বিল ২০০ টাকা, আন্দোলনকারী কোনো শ্রমিক-কর্মচারিকে চাকরি থেকে বহিষ্কার না করাসহ ১৩ দফা।
এদিকে প্রিন্স জ্যাকার্ড লিমিটেডের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে বিকেল ৪টার দিকে চলে যা। তবে আগামীকাল আবার আন্দোলন হবে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, টঙ্গী পশ্চিম থানার সাতাইশ বাগানবাড়ি এলাকার প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেডের শ্রমিকদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ পালন করেছে। সকাল সোয়া ৯টার দিকে তারা আগস্ট মাসের বেতনের দাবিতে উৎপাদন কাজ বন্ধ করে এ কর্মবিরতি পালন ও বিক্ষোভ করে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত রাখে এবং সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়। শ্রমিক-মালিক পক্ষের মধ্যে আলেচনার পর ন্যাশনাল পলিমারের সমস্যা সমধান হয়েছে। এমট্রানেট গ্রুপের সব শ্রমিক, স্টাফ ও কমচারিদের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, সেনাবাহিনী, ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা আলোচনা করেছেন। আশা করি সমস্যা সমাধান হবে।