বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরগুনা শাখার সমন্বয়কারী মীর রিজন মাহমুদ নিলয়ের বাসায় হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চেষ্টায় ঘটনায় বরগুনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বরগুনা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ২৪ নেতা কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় গত ৪ আগষ্টের বিবরন দেখানো হয়েছে।
আজ ১ সেপ্টেম্বর রবিবার বরগুনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরগুনা শাখার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম নীরব। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরগুনা থানার অফিসার ইনচার্জ দেওয়ান জগলুল হাসান।
এ মামলার আসামীরা হলেন, বরগুনা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মইনুল হাসান আসাদ, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য আরিয়ান সুহার্ত, সুজন কর্মকর পিতা স্বপন কর্মকর বটতলা, বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা, সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরান, সাগর কর্মকার পিং অজ্ঞাত সাং আমতলা সড়ক, শিমুল পিং আঃ কুদ্দুস চর মাইঠা, ছাত্রলীগে কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য সাইফুল ইসলাম সাগর, ঢলুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম মনির, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফাহাদ হাসান তামিম, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য আরেফিন রাফি, বরগুনা কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য মোরসালিন বাদশা পিং অজ্ঞাত সাং কালিবাড়ী, মোঃ আফ্রিদি ওমর পিং লিটন খান মুসলিম পাড়া, শাহাজাদা রিয়াদ খান পিং মোনায়েম খান সাং লাকুরতলা, হৃদয় মৃধা, ওমর ফারুক, ইমরান হোসেন নয়ন, মোঃ হাসান, মোঃ সোহাগ মিয়া, মোঃ অলি আহমেদ, মোঃ বেল্লাল, আতিকুজ্জামান বাবু মৃধা ও পাথরঘাটা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি সুজন আহমেদ।
মামলায় বাদী তার এজাহারে উল্লেখ করেন, মামলার আমি সহ ১ নং সাক্ষী মীর রিজন মাহমুদ নিলয় সহ কতিপয় সাক্ষীগণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বরগুনায় অংশগ্রহণ করি, যাহার ফলে উপরোক্ত আসামীগন আমার ও কতিপয় সাক্ষীদের উপর ক্ষিপ্ত থাকে এবং আমাদের প্রতিনিয়ত খুন জখমের হুমকি প্রদান করিতে থাকে, আমি সহ কতিপয় সাক্ষিগণ বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা থেকে যে সকল কর্মসূচি আসে সেই কর্মসূচি অনুযায়ী গত ৪ আগষ্ট তারিখ দুপুর অনুমান ১টার সময় উপরোক্ত আসামিগণ সহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা বেআইনি জনবদ্ধ হয়ে দাঁড়ালো দা, লোহার রড, দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রসহ মীর রিজন মাহমুদ নিলয়ের নাম ধরিয়া অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে এবং বসতঘরের বিভিন্ন রুমের মধ্যে প্রবেশ করিয়া ১ নং সাক্ষীকে খোঁজাখুঁজি করিতে থাকেন, খোঁজাখুঁজি করিয়া ১ নং সাক্ষীকে না পাইয়া ১ নং সাক্ষীর মা, ২ নং সাক্ষী ও ভাইকে সকল আসামী তাদের অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করিতে থাকে, একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে বসত ঘরে বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র বসতঘরের জানালা বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাংচুর করিয়া অনুমান ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে।
মামলার ২ নং আস্বামী আরিয়ান সুহার্ত ও তিন নং আসামী সুজয় কর্মকার ২ নং সাক্ষীর বসত ঘরে আগুন দিয়া পুড়াইয়া ফেলার জন্য তাদের হাতে থাকা পেট্রোল বোমা মারিয়া আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে, এক পর্যায়ে তারা চলে যাওয়ার সময় ১ নং সাক্ষী, ২ নং সাক্ষী ও ৩ নং সাক্ষীদেরকে এই বলে হুমকি প্রদান করে যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা অংশগ্রহণ করেছে ওদের যেখানে পাবো সেখানেই খুন করে ফেলবো।
তিনি আরো বলেন, তারা বের হয়ে যাওয়ার সময় একপর্যায়ে আমাকে রাস্তায় পেয়ে তারা সকলে আমায় কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে, এসময় ২ নং আসামী আরিয়ান সুহার্ত তার হাতে থাকা দাঁড়ালো দা দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ মারিলে উক্ত কোপ লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়া আমার বাম পাশের কপালে লাগিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত হারকাটা জখম হয়, এ সময় আশেপাশে থাকা সাধারণ লোকজন আসিতে থাকলে আসামীগণ আমাকে খুন করার হুমকি দিয়ে চলিয়া যায়। কতিপয় সাক্ষীগন আমাকে উদ্ধার করিয়া বরগুনা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে আমি সুস্থ হয়ে বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানাইলে তাহারা আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করিয়া ব্যর্থ হওয়ায় আমার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে আলাপ আলোচনা করিয়া থানায় আসিয়া এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হইল, ঘটনা সত্য, আমি বিচার চাই।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ড বিধির ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৪২৭ ও ৫০৬ ধারায় বরগুনা থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশী তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।