মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার নদী, খাল-বিলে বেড়ে ওঠা দেশি ও রুই জাতীয় মাছের পোনা অবাধে শিকার করা হচ্ছে। স্থানীয় হাট-বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যেই।
পোনা মাছ নিধনে ব্যবহৃত হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, চায়না দোয়ারি, বেড় জাল ও ভেসাল। কতিপয় মৎস্যজীবী ও জেলেরা প্রতিদিনই পোনা মাছ ধরে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে অবাধে বিক্রি করলেও তা বন্ধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। এমন চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এসব মাছের আকাল দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। দ্রুত প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
আইন অনুযায়ী, জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ ইঞ্চির নিচে রুইজাতীয় মাছ (কাতলা, রুই, মৃগেল, কালিবাউস ও ঘনিয়া) ধরা ও বিক্রয় নিষিদ্ধ হলেও উপজেলার হাট-বাজার গুলোতে নিয়মিতই বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পোনা মাছ। ফলে উপজেলায় রুইজাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গত কয়েকদিনে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউস, পাঙ্গাস, টাকি, শোলসহ দেশিয় বিভিন্ন মাছের পোনা। বিশেষ করে উপজেলা সদরের লেছড়াগঞ্জ, আন্ধারমানিক, কাণ্ঠাপাড়া, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মানিকনগর, বাহিরচর, বাহাদুরপুর, কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কুটিরহাট, বাল্লা ইউনিয়নের ভাদিয়াখোলা, মাচাইন, বাস্তাসহ বলড়া ও ঝিটকা বাজারেও প্রকাশ্যে বিক্রি হয় এই পোনা মাছ। এছাড়া অনেক জেলে পোনা মাছ ধরে বিভিন্ন এলাকার মোড়ে এবং ঘুরে ঘুরেও বিক্রি করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ী বলেন, আমরা মাছ ধরি না। জেলেরা মাছ ধরে। তাদের কাছে থেকে কিনে আমরা বিক্রি করি। জেলেদের পোনা মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে। উপজেলা মৎস্য দপ্তরের নজর না রাখা এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা না করার কারণে পোনা মাছ শিকার ও বিক্রি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেন তারা।
কয়েকজন জেলেদের সাথে কথা বললে তারা জানান, পোনা মাছ বিক্রি নিষেধ তারা তা জানেন না। আবার কয়েকজন বলেন, নিষিদ্ধ জানলেও পেটের দায়ে তারা পোনা মাছ ধরেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নুরুল ইকরাম বলেন, আমাদের মৎস্য দপ্তরের অভিযান চলমান আছে৷ পোনা মাছ রক্ষায় আগে সবাইকে সচেতন হতে হবে। মানুষ সচেতন নাহলে শুধু অভিযান করে বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, পোনা মাছ রক্ষায় দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।