প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৪, ১:৫৩ অপরাহ্ন
সরকার পতন আন্দোলনের লেখাগুলো মুছে দেওয়া হচ্ছে। আঁকা হচ্ছে লাল-সবুজের বাংলাদেশের ছবি। স্বাধীনতা, সভ্যতা, সংস্কার, শান্তিসহ দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে নানান লেখা। ধর্মীয় নানা শান্তির বাণীও শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন সীমানা দেয়ালে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌর এলাকার কাউতলীয় মোড় থেকে কালীবাড়ি মোড় পর্যন্ত দেয়ালে এসব ছবি আঁকা হচ্ছে। আঁকার ধরণ দেখে বুঝা যায় আঁকিয়েরা প্রশিক্ষিত নয়। মনের জোরে আঁকাছেন তাঁরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্তত শতাধিক শিক্ষার্থীকে শনিবার আঁকার কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনেও তাঁদেরকে আঁকতে দেখা গেছে।
গত কয়েকদিনের মতো শিক্ষার্থীদেরকে পুরো জেলাতেই সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়। স্কাউটস সদস্যরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। দায়িত্বরতদের আহবানে সাড়া দিয়ে মোটরসাইকেল আরোহীদের বেশিরভাগকে হেলমেট পড়ে বের হতে দেখা যায়।
এদিকে কাজে ফিরতে শুরু করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ। একাধিক থানায় পুলিশ সদস্যরা যোগ দিয়েছেন। তবে এখনো তারা বাহ্যিক কোনো কাজে যোগ দিচ্ছেন না। তবে থানায় বসে আভ্যন্তরীন কাজ শুরু করেছেন তারা। সদর থানা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় আইনশৃংখলা বিষয়ে প্রাথমিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সেনাবাহিনী সদস্যরা। জেলা পরিষদ কার্যালয়ে তারা অস্থায়ীভাবে বসে আইনশৃংখলার বিষয়টি নজর রাখছেন।
সব মিলিয়ে জেলার সর্বত্র স্বস্থি ফিরতে শুরু করেছে। তবে নানা গুজবের কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি শিক্ষার্থী, বিএনপি নেতৃবৃন্দ, আলেম-ওলামারা বিভিন্নস্থানে হিন্দুদের মন্দির ও বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন। কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে জেলার স্বর্ণ ব্যবসায়িদের মধ্যে। সুযোগ সন্ধানী কেউ লুটপাট চালায় কি-না সেই ভয়ে অনেকে দোকান খুলতে চাইছেন না। পুলিশ কখন পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করবেন সেদিকে তাকিয়ে আছেন তারা।
এদিকে পুলিশ সদস্যরা কাজে না থাকায় শুক্রবার বিকেলে কাউতলী এলাকার এন্ডারসন খাল থেকে ৩৫-৪০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি লাশ উদ্ধার করে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জেসমিন সুলতানা শনিবার বিকেলে বলেন, ‘আখাউড়া উপজেলা পরিষদে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সেখানকার ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ ও পুরোদমে কাজ শুরু করার প্রক্রিয়া চলছে। বাকি কোথাও প্রশাসনিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদেরকে জানান, পুলিশ কাজ শুরু করেছে। তবে এখনই অভিযানিক কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে না। তবে থানায় যে ধরণের আভ্যন্তরীন কার্যক্রম রয়েছে সেগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে।