নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৪ পুলিশসহ অন্তত ৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষণিক নিহত সকলের পরিচয় জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গতকাল সোমবার বিকেল পৌনে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় এ ঘটনা ঘটে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থনকারীরা সোনাইমুড়ী বাইপাস এলাকায় জড়ো হয়। এরপর তারা সেখানে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে আনন্দমিছিল থেকে কয়েকজন সোনাইমুড়ী থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ওই সময় থানার ভেতর থেকে পুলিশ গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন। এরপর উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে হামলা-ভাঙচুর চালালে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে তারা থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় আরও শতাধিক লোক আহত হয়। নিহতদের মধ্যে ৩৪ জন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে এক পুলিশ সদস্যও রয়েছে বলেও জানা যায়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার দিকে ৩৭ জন গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে ৩ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। বর্তমানে ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আহতদের বেশির ভাগই সোনাইমুড়ীর।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত ৪ পুলিশ সদস্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তখন ১৩ জন পুলিশ সদস্য সেখানে ছিলেন। এর মধ্যে ৪ জনকে পাওয়া গেছে। ৩ জন পুলিশকে জবাই করে হত্যা হয়েছে। ধোঁয়ায় ভবন ছেয়ে আছে। পুরো ভবন রিকভারি করার পরে প্রকৃত বিষয়টি বোঝা যাবে।
তিনি বলেন, শুনতেছি সাধারণ মানুষ ৩ জন কেউ বলতেছে ২ জন মারা গেছে। বেঁচে যাওয়া এক পুলিশের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আন্দোলনকারীরা আক্রমণ করে পরে তারা তাদের বাঁচানোর জন্য উপরে ফাঁকা গুলি করে।
নিহতের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছে, এএসআই মো. নাছির, এসআই মো. বাছির, কনস্টেবল মোশারফ ও গিয়াস। তবে গিয়াসের বিষয়টি এখনো পুরোপুরি শিউর না। ধোঁয়ার কারণে আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছি না। সোনাইমুড়ী থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিনের শরীরে ৫টি গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
অপরদিকে, বিকেল ৫টার দিকে এক দল বিক্ষোভকারী আনন্দমিছিল নিয়ে চাটখিল থানায় হামলা চালান। থানা ভবনের ভেতরে প্রায় প্রতিটি কক্ষে হামলা-ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়।