সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ নিয়ে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেউ নষ্ট করতে না পারে তার জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে বলে দাবি করেছে ডিএমপি। কোথাও কোথাও চৌকি বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। বিশেষ করে ঢাকার প্রবেশমুখ গুলোতে শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে এ তল্লাশি জোরদার করা হয়।
এর বাইরেও রাজধানীর প্রগতি সরণি, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা গেট এলাকায় পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানান, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের এ অবস্থান। আমাদের বেশ কয়টি টিম এখানে কাজ করছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি।
প্রয়োজনে ‘সন্দেহভাজন’দের তল্লাশি করা হচ্ছে। সিএনজি, মোটরসাইকেল, দূরপাল্লার বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের ব্যাগ দেখা হচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে, ৯ দফা দাবি আদায়ে সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, সারাদেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে শনিবার (৩ আগস্ট) সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার (৪ আগস্ট) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হলো।
এ ছাড়া সারাদেশের আপামর জনসাধারণকে অলিতে-গলিতে, পাড়ায় পাড়ায় সংগঠিত হয়ে কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান তিনি।
অপরদিকে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসে পরিস্থিতি শান্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় বৈঠক শেষে শুক্রবার রাতে গণভবন থেকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
বৈঠকে বলা হয় সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখিয়ে চলমান পরিস্থিতি শান্ত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসবে এই তিন নেতা। এজন্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও অপর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। তবে এই দলে ১৪ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতাদের যুক্ত করাও হতে পারে।
জানা গেছে, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে দেশে-বিদেশে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েছে ক্ষমতাসীনরা। এমতাবস্থায় এখন তাড়াহুড়া করে কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে ভেবেচিন্তে পা ফেলতে চাইছে দলটি। তারা কোনো উসকানিতে পা না দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে চায়।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের আপত্তি নেই। তবে তৃতীয় পক্ষ যেন তাদের ব্যবহার করে সুবিধা আদায় না করতে পারে সেদিকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভাপতি। ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলার জন্য বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় সতর্ক থাকার জন্যও বলে দিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীদের ওপর কেউ যেন কোনো অন্যায় আচরণ না করে, সে নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।