প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪, ৫:৩৭ অপরাহ্ন
ঘটনাটি ২০ জুলাই। তখন রাত রাত ৯টা। সাভার নিউ মার্কেট এলাকায় প্রচন্ড গোলাগুলি। কোটা বিরোধীদের সঙ্গে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। গার্মেন্টস কর্মী শুভ শীল গোলাগুলির সময় সাভার নিউ মার্কেট এলাকার একটি দোকানে আশ্রয় নেন। পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলে শুভ দোকান থেকে বের হন। রাস্তায় দাড়াতেই কোথা থেকে গুলি এসে শুভ শীলের শরীর ঝাজরা করে দেয়। তার লাশ রাস্তায়ই পড়ে ছিল। তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই যুবকের মৃত্যু হয়।
বাকরুদ্ধ কন্ঠে ভাতিজা শুভ’র মৃত্যু কাহিনী বর্ননা করেন তার চাচা বিজয় কুমার শীল।
২০ বছর বয়সী শুভ কুমার ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়শাল ইউনিয়নের মুনুড়িয়া গ্রামের বিকাশ চন্দ্র শীলের ছেলে। তার পিতার সাভার এলাকায় সেলুনের দোকান আছে।
চাচা বিজয় কুমার শীল জানান, বহু বছর আগে তার ভাই বিকাশ শীল স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকার সাভার এলাকায় বসবাস করেন। শুভ সাভারের জিরাবোতে একটি গার্মেন্টসে চাকরী করতেন। মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়ি আসতেন শুভ। আজ মঙ্গলবার মুনুড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় টিনের একটি ভাঙ্গাচোর ঘর রয়েছে শুভদের ভিটেই। গ্রামে তার স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া।
নিহতের চাচাতো ভাই নয়ন কুমার শীল জানান, দাদা মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়িতে আসতেন। সর্বশেষ গত পূজার মধ্যে শুভ বাড়ি এসেছিল। আর বাকী সময় ওই পরিবারের সঙ্গে তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা হতো। দাদা অনেক ভালো মানুষ ছিল। কথা কম বলতেন। শুভ সপ্তম শ্রেনী পর্যন্ত পড়ালেখা করে সাভারের জিরাবো এলাকার একটি গার্মেন্টসে অপারেটর হিসেবে চাকরী করতেন।
স্থানীয় ঘোড়শাল ইউনিয়নের সাবেক মেম্বর সাধন কুমার জানান, শুভ ঢাকায় গুলিতে নিহত হওয়ার পর তার লাশ সেখানেই দাফন করা হয়, গ্রামের বাড়িতে লাশ আসেনি।
ঘোড়শাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ লিলটন জানান, মুনুড়িয়া গ্রামের দক্ষিন পাড়ার একটি ছেলে সাভারের ঢাকায় গুলিতে নিহত হন বলে তার পরিবারের কাছ থেকে জানতে পারি। তবে লাশ গ্রামের বাড়িতে আনার পরিবেশ পাননি তার পরিবার।
স্থানীয় নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোঃ আমির হোসেন জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মুনুড়িয়া গ্রামের একটি ছেলে নিহত হওয়ার কথা শুনেছেন। তবে লাশ গ্রামে আসেনি।
তিনি বলেন, শুভ শীলের বাড়ি মুনুড়িয়া গ্রামে হলেও তারা স্থায়ী ভাবে ঢাকার সাভার এলাকায় বসবাস করেন। অনেক বছর আগে তারা গ্রাম থেকে চলে গেছেন। এখানে তার চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা বসবাস করেন।