প্রকাশ: বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪, ৫:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪, ৫:১৬ অপরাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আজ বুধবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। কোটা সংস্কারের দাবি আন্দোলনে বাধা দিলে এ ঘটনা ঘটে। এসময় বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা আহত হয়েছেন।
পৌর এলাকার বিভিন্নস্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন ছাত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হন। এক পর্যায়ে কলেজের প্রধান ফটকের তাঁরা বসে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এসময় সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ নেত্রী ফাতেমা আফরিন সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে বুঝিয়ে সরে যেতে বলেন। এতে কাজ না হওয়ায় সাধারন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অসৌজন্যমূলক আচরন করেন। এক পর্যায়ে তাদের গা ঘেঁষে এবং সামনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এসে নেতাকর্মীরা নিবৃত করার চেষ্টা করেন।
একই সময়ে কলেজ সংলগ্ন এলাকায় ১০-১৫টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেলে করে লাঠিসোটা, কাঠের টুকরা ও কাঠ দিয়ে বানানো ছোট আকারের বৈঠা নিয়ে কলেজের সামনের সড়ক, লেভেল ক্রসিং এলাকা, নিউ মৌড়াইল ও কাউতলীতে মহড়া দেন। তবে শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা পর্যন্ত কলেজের সামনে বসে কর্মসূচি পালন করে মিছিল নিয়ে চলে যান।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে কাউতলী মোড় থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানে একটি মিছিল নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। মিছিলটি জেলা ও দায়রা জজের বাসভবনের সামনে পৌঁছালে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলমসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা ও বৈঠা নিয়ে ধাওয়া করলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা রবিউল আহত হন।
কলেজের সামনে বিক্ষোভ করা শিক্ষার্থী ফারহানা শারমিন বলেন, 'ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ব্যানার টেনে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে। আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেওয়া শুরু করেছে। তারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে অপমানিত করেছে। কারণ আমরা কোটার সংস্কারের দাবিতে এসেছি। আমার ভাই ও বোনের শরীরে থেকে যে রক্ত ঝড়েছে তার প্রতিবাদ জানাতে এসেছি।'
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের কোনো বাঁধা দেয়নি। তাঁদের কোনো দাবি থাকলে তা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দিতে বলেছি। তাদেরকে পানিসহ খাবার দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাঁদের হামলায় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আহত হয়েছে। তার ডান চোখের উপর চারটি সেলাই লেগেছে।'
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, 'ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাটি তদন্তের বিষয়। পৌর এলাকার বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।'