প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪, ৫:২৫ অপরাহ্ন
মাদারীপুরে ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত গ্রাহকের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতে হামলা ও ছিনতাইয়ের নাটক সাজায় বিকাশের বিক্রয়কর্মী আল আমিন সরদার। ঘটনার আট দিন পর ছিনতাই হওয়া সাড়ে ১৪ লাখ টাকাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায় মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান।
এ সময় ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
গতকাল রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার চর কুলপদ্বী এলাকার হযরত আলী সরদারের ছেলে আল আমিন সরদার (২৩), কালকিনি উপজেলার দড়িচর লক্ষ্মীপুর এলাকার আব্দুস সালাম সরদারের ছেলে নুরুল করিম (২৫) ও একই উপজেলার এনায়েতনগর এলাকার আলমাছ সরদারের ছেলে মোঃ সাইমুন সরদার (১৯।
সংবাদ সম্মেলন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান জানান, গত ৭ জুলাই সকালে ব্যাংক থেকে ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করে বিকাশের বিক্রয়কর্মী আল-আমিন ও হাসান উদ্দিন (২৫)। পরে তারা শহরের পুরানবাজারের পার্শ্ববর্তী রাস্তি সেতু হয়ে হাউসদি বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। মাঝপথে দক্ষিণ দুধখালী রাস্তায় আসলে পিছন থেকে দুইটি মোটরসাইকেল এসে তাদের গতিপথ রোধ করে থামিয়ে দেয়। এসময় আল-আমিনকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। আর হাসান উদ্দিন দৌড়ে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করে। এসময় তাদের সাথে থাকা ১৮ লাখ টাকা ছিনতাইকারীরা নিয়ে যায়। পরে আহত আল আমিনকে উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনায় বিকাশের ম্যানেজার হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। পরে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ, থানা পুলিশ ও সিআইডি যৌথভাবে মামলাটি তদন্তে নামে। তদন্তে বেড়িয়ে আসে আসল রহস্য। মূলত বিকাশকর্মী আল-আমিন এর পরিকল্পনায় সংঘটিত হয় ছিনতাই কাজ। আল আমিন তার ভায়রার মাধ্যমে ছিনতাইয়ের নাটক সাজান।
এই ঘটনার মূলহোতা বিকাশের বিক্রয়কর্মী আল আমিনসহ তিনজনকে নিজবাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। এ সময় ছিনতাই হওয়া ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৫শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় ঘটনার সাথে ব্যবহৃত মোবাইল ও মোটরসাইকেল। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিকাশের ডিস্ট্রিবিউটর মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, কর্মীরা গ্রাহকের টাকা নিজেরা আত্মসাৎ করে ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছিল। পুলিশ তদন্ত করে আসল ঘটনা সামনে এনেছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনেছে। আমি জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন,"অপরাধীরা যতই চৌকস হোক না কেন, তারা অপরাধ করার সময় কিছু প্রমাণ রেখে যায়। পুলিশ সেই প্রমাণ অনুসন্ধান করে অপরাধীদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে।পুলিশের এমন তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।"