ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যার রহস্য উন্মোচনের পরিবর্তে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আনার সমর্থিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তাদের বক্তব্য এমপি আনারের লাশের হদিস, তার জামাকাপড়, পাসপোর্ট, ঘড়ি, আংটি, চশমা ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি। তাহলে আমরা কি ভাবে বুঝবো এমপি আনার হত্যা হয়েছে ? কাজেই নিখোঁজ থাকলে সন্ধান চাই, আর খুন হলে লাশ চাই।
আজ শনিবার (১ জুন) দুপুরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ভূষণ সরকারী স্কুল মাঠে আয়োজিত জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে কালীগঞ্জের জনপ্রতিনিধিরা এই প্রশ্ন তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাসেল ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহজনাজ পারভীনসহ ১৫ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বর ও পৌর কাউন্সিলরবৃন্দ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কালীগঞ্জবাসীর নেতা সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার আমাদের মাঝে অনুপস্থিত। এরকম একটি সময়ে কথা বলার মত ভাষা আমাদের নেই। কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত জনগণের নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জনগনের কাছে আমরা কোন সদুত্তর দিতে পারছি না।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এমপি আনার টানা তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তার আগে পৌর কমিশনার ও উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। এমন একজন জননেতার নিখোঁজ বা হত্যার শিকার হতে পারে তা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা এ সংবাদ সম্মেলন থেকে তার ব্যবহৃত পাসপোর্ট, ঘড়ি, আংটি, চশমাসহ অন্যান্য জিনিসপত্র এবং কথিত রক্তমাখা পোষাক জনসমক্ষে প্রদর্শনের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া আনার এমপি মহোদয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলির সর্বশেষ অবস্থান দফাওয়ারী তথ্য প্রকাশ করার দাবী তোলেন জনপ্রতিনিধিরা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আনার হত্যাকান্ড নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক মৃত্যুর তথ্য প্রচার করা হয়েছে যা জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় হত্যাকান্ডের তদন্তপূর্বক সঠিক তথ্য প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। খুনী জিহাদ মুম্বাইতে কার অধীনে কসাইয়ের কাজ করত তার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশেরও দাবি জানানো হয়।
আনারের অন্ধকার জগৎ নিয়ে মিথ্যা খবরের প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলা ছাড়া আনার এমপির বিরুদ্ধে আর কোন মামলা ছিল না, অথচ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। যা আমাদের জন্য অত্যান্ত দুঃখজনক ও বেদনার। বিগত ১৭ বছরে আনার এমপির বিরুদ্ধে কথিত মাদক, হুন্ডি, সোনা চোরাচালানের কোন মামলার প্রমাণ সংশ্লিষ্ট মিডিয়াগুলোর কাছে থেকে থাকলে তার তথ্য প্রকাশ করার দাবি তোলেন তারা। তাছাড়া এই হত্যাকান্ডকে সর্মথন জানিয়ে সংসদ সদস্যের চরিত্র হননের জন্য সামাজিক প্রচার মাধ্যমে একটি নিদৃষ্ট গোষ্ঠীর অসংখ্য একাউন্ট/ আইডি থেকে প্রতিনিয়ত যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে বিচার করার দাবী জানিয়ে আনার এমপির ব্যবহৃত মোবাইল থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে যাওয়া এসএমএস এবং কল রেকর্ড প্রকাশ করার দাবি তোলেন আনার সমর্থক জনপ্রতিনিধিরা।